রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ছাত্রদলের দুই কর্মী স্থানীয় এক বিএনপি নেতার ফেস্টুন ছিঁড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের স্থানীয়রা আটক করেন। পরে তাদের স্বীকারোক্তি নেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের একজনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে সিহাব নামে ওই ছাত্রদলকর্মীকে বলতে দেখা যায়, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বিদ্যুতের কথায় তারা ব্যানার-ফেস্টুন কাটতে এসেছিলেন।

ইংরেজি নববর্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলনের পক্ষ থেকে এই ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছিল। ব্যারিস্টার মিলন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.

) শরীফ উদ্দীনের অনুসারী। এ কারণে বিদ্যুতের কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় তাঁর ফেস্টুন কেটে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলনের।

ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। রাজনীতি করতে হলে সবাইকে সহনশীলতা দেখাতে হবে। কর্মীদের কারণে কিন্তু নেতাদের বদনাম হয়। তাই কর্মীরা কী করছেন তা খেয়াল রাখা দরকার।’’

আরো পড়ুন:

আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভরাডুবি: দলীয় বিচারের মুখোমুখি বিএনপি নেতারা

শায়েস্তাগঞ্জে শহীদ জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদর সংলগ্ন গোরস্থান এলাকায় মিলনের ফেস্টুন কাটার অভিযোগে সিহাব ও রয়েল নামের দুই ছাত্রদলকর্মীকে আটক করেন স্থানীয়রা। সিহাবের বাড়ি পবা উপজেলার আলীমগঞ্জ এলাকায়। রয়েলের বাড়ি গোদাগাড়ীর বিয়ানাবোনা গ্রামে। তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের পর স্থানীয়রা তাদের ছেড়ে দেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রদলকর্মী সিহাব বলছেন, ‘‘উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ আমাদের ফেস্টুন কাটতে পাঠিয়েছেন। এর আগেও ফেস্টুন ছেঁড়া হয়েছে।’’ সিহাব বলতে থাকেন, ‘‘বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি পালিয়েছেন।’’

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন ছাত্রদল নেতা বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ। তিনি বলেন, ‘‘ফেস্টুন নাকি কাটা হয়েছে আধা কিলোমিটার দূরে গোরস্থান এলাকায়। আমার এ দুই ছেলে ছিল উপজেলা সদরে। তারা সেখানে চা খাচ্ছিল। পরিকল্পিতভাবে তাদের ধরে মারধর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। তারা কেউ পোস্টার ছিঁড়তে যায়নি। আমাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’’

বিদ্যুৎ বলেন, ‘‘দুজনকেই মারধর করা হয়েছে। সিহাব নামের ছেলেটা আহত। তাকে রড দিয়েও মারা হয়েছে। তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করব। তারপর মামলার ব্যাপারে চিন্তা করব।’’

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা তার জানা নেই। কোনোপক্ষ যদি অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ছ ত রদল র র রহম ন এল ক য় উপজ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ