পিকনিকের জন্য ছাত্রদল নেতার চাঁদা দাবি, ফোনালাপ ফাঁস
Published: 23rd, January 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ছাত্রদল নেতা খালিদ মাহমুদ সৈকতের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দুই মিনিট ৭৪ সেকেন্ডের ওই ফোনালাপে তাকে বিকাশ নামে এক ব্যক্তির কাছে পিকনিকের জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ফেসবুকে তার চাঁদা দাবির কল রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খালিদ মাহমুদ সৈকত। তিনি বলেন, “রেকর্ডটি আমিও পেয়েছি। রেকর্ডটি এআই প্রযুক্তিতে বানানো। রেকর্ডের ব্যক্তিটি আমি নই। এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং (সংবাদ সম্মেলন) করব।”
আরো পড়ুন:
টুঙ্গিপাড়া ছাত্রদল নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি
ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শনিবার
অডিওতে খালিদ মাহমুদ সৈকতকে বলতে শোনা যায়, “আমি উনাদের সঙ্গে কথা বলেছি, আপনার বিষয়ে সব জানিয়েছি। এখন ওনারা বলতেছে, থার্টি ফার্স্ট নাইটের পিকনিকে একটা পার্টি দিতে হবে।” বিকাশ রায় জিজ্ঞেস করেন- “কীরকম সেটা, কত দিতে হবে?” উত্তরে সৈকত বলেন, “কত, বিশ (২০) হাজার হইলে হবে।” বিকাশ রায় প্রতি উত্তরে বলেন, “আচ্ছা ভাই আমি তো বললামই আমার তো ওই রকম সামর্থ্যই নাই।” এরপর সৈকতকে বলতে শোনা যায়, “আমি আপনার পক্ষ নিয়েই কথা বলেছি। আমি প্রথমে কী বলেছি, আর এখন কত বললাম। আমি নিজেই এখন নমনীয় হয়ে গেছি। যাই হোক কখন আপনি টাকা দিবেন?” এরপর বিকাশ রায় সৈকতকে বলেন, “শুনেন সৈকত ভাই, আমার এরকম কোনো কিছু নাই। এজন্য আমার বাড়িটা ছোট, ভাই হিসেবে দেখে আসার কথা বললাম।” সৈকত এবার বলেন, “আমি বুঝেছি, আমি ঐজন্য বলেছি, নাম টাম দেওয়ার দরকার নাই। দাদা হিসেবে পিকনিকে একটা ভালো টাকা দিলেই হবে। আমরা আর ইয়া করতেছি না।” বিকাশকে এবার বলতে শোনা যায়, “আমার হাতে টাকা পয়সা নাই। একদম আদি ইতিহাস তোমাকে বললাম। আমি আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। কোনো রকম দিনাতিপাত করতাম।” সবশেষে সৈকত বিকশকে বলেন, “আর ছিলাম না কন, এইলা আমার মুখস্থ হয়েছে। আপনি এখন কখন দেখা করবেন সেটা বলেন। টাকা ম্যানেজ করে রাত্রের মধ্যে দেখা করেন। কোনো প্যারা নিয়েন না।”
বিকাশ রায় দেবীগঞ্জ সেটেলমেন্ট অফিসে চুক্তিভিত্তিত কাজ করেন।
অভিযুক্ত খালিদ মাহমুদ সৈকত দেবীগঞ্জ কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সৈকত অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিকাশ রায় অডিও ক্লিপটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বিষয়টি তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলেও জানান।
বিকাশ রায় বলেন, “আমি সেটেলমেন্টে কাজ করে নাকি অনেক দুর্নীতি, অনিয়ম করেছি। এজন্য প্রথমে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এক পর্যায়ে ২০ হাজার টাকা চায়। আমি কোনো টাকাই দেইনি।”
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তারিকুজ্জামান তারেক বলেন, “ছাত্রদলে থেকে অপকর্ম করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র কর ড বলল ম
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।