শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চবিতে মতবিনিময়
Published: 27th, January 2025 GMT
চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় চবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড.
এ সময় চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এসএম ফজলুল হক উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা চারটি বিষয়বস্তুর উপর দলগতভাবে তাদের মতামত প্রদান করেন। পরে এসব মতামতের সারসংক্ষেপ সভায় পেশ করেন।
আলোচ্য সূচীগুলোর মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভূতত্ত্ব বিষয়ক প্রভাব; চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় কারিগরি ও প্রকৌশল সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যালোচনা; চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যালোচনা; চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় শাসন, নীতি বাস্তবায়ন ও জনসচেতন বিষয়ক পর্যালোচনা।
চবির সিনেট এবং সিন্ডিকেট সদস্য এস. এম. ফজলুল হক বলেন, “আমাদের সমাজব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা যে পড়াশোনা করে, তা পিতামাতার আগ্রহের ভিত্তিতে করে থাকে। শিক্ষার্থীর নিজেদের আগ্রহে পড়াশোনা করে না। আমার মনে হয়, চবি তার আঙ্গিনার বাহিরে গিয়ে মানুষের সুখে দুখে সঙ্গী হয়েছে আজই প্রথম। জলাবদ্ধতা নিয়ে চবি যে ভূমিকা পালন করছে তা প্রসংশনীয়।”
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান শুধু যোগাযোগের মাধ্যমে হবে না। এতে প্রত্যেকের জায়গা থেকে যেটুকু অবদান রাখা যায়, সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।”
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, “চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা একটি টেকনিক্যাল সমস্যা। তবে এখানে প্রশাসনিক কাজও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সবার সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতে একটা গাইডলাইন তৈরি করা এ সভার উদ্দেশ্য। সবার সহযোগিতা ও পরামর্শের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা দূর করতে আমরা চেষ্টা করে যাব।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, “চবিতে দখলদারিত্বের অবসান হয়েছে। এখন আপনারা সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে এখানে আসবেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, আপনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আমরা আপনাকে সম্মানের সঙ্গে সমাবর্তনে নিয়ে যেতে চাই। তিনি আমাদের সমাবর্তনে আসার জন্য সম্মতি দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু ক্যাম্পাসে থাকে না। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গায়ও থাকে। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে এগিয়ে আসা আমাদেরও দায়িত্ব। এমনকি পুরো বাংলাদেশের জলাবদ্ধতা মোকাবিলা করতে চাই আমরা। আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে একটি পরিপূর্ণ গাইডলাইন তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রদান করব।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।