রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে, রেলে ভোগান্তির শঙ্কা
Published: 27th, January 2025 GMT
রেল মন্ত্রণালয়ের আহ্বান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেও কর্মবিরতি প্রত্যাহারে রাজি হননি রানিং স্টাফরা। সোমবার রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতিতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। এতে তীব্র ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১০৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে ৭৫ হাজারের বেশি আসন রয়েছে। অধিকাংশ টিকিট আগাম বিক্রি হওয়ায়, ট্রেন না চললে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ হবে। লোকাল, কমিউটার, মেইল ট্রেনসহ দিনে রেলে তিন লাখ যাত্রী ভ্রমণ করেন। রেল মন্ত্রণালয় সোমবার বিজ্ঞপ্তিতে, যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও কাজ হয়নি।
রানিং স্টাফরা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না। লোকো মাস্টার (চালক), গার্ড, টিটি এবং অ্যাটেন্ডেন্টসদের রানিং স্টাফ বলা হয়। দিনে ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে তারা একদিনের বেতনের সমান ভাতা পান, এর ৭৫ শতাংশ পেনশনে যোগ হয়।
২০২১ সালের ৪ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত দেয়, ভাতা পেনশনে যোগ বেআইনি। যদিও রানিং স্টাফরা ১৮৬০ সাল থেকে এ সুবিধা পাচ্ছেন। তারা আন্দোলনে নামার পর ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট সিদ্ধান্ত হয়, দুই দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত পাল্টাবে।
তবে তা হয়নি জানিয়ে রেলওয়ে রানিং স্টাফ এবং কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো.
সোমবার কমলাপুরে গিয়ে রানিং স্টাফদের সঙ্গে বৈঠক করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নাজমুল ইসলাম সমকালকে বলেন, সমস্যার সমাধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে। রেল সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, যাতে আনুতোষিক পেনশনে যোগ হয়। কিন্তু রানিং স্টাফরা এ সুবিধা পুনর্বহালের আগে কাজে ফিরতে রাজি হয়নি।
মুজিবুর রহমান বলেছেন, রেল যদি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করতে না পারে তাহলে উপদেষ্টা পদত্যাগ করুক। একাধিক রানিং স্টাফ সমকালকে বলেছেন, নিয়মানুযায়ী আট ঘণ্টা ট্রেন চালানোর পর আট ঘণ্টা পূর্ণ বিশ্রাম পাবেন কর্মীরা। কিন্তু জনবল সংকটে ১০-১২ ঘণ্টা ট্রেন পরিচালনার পর, তিন চার ঘণ্টা বিরতিতে আবার কাজ করতে হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক