রেলওয়ের রানিং স্টাফদের ডাকা কর্মবিরতির সময় রাজশাহী রেল স্টেশনে ভাংচুরের ঘটনায় সুমন আহম্মেদ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত সুমন আহম্মেদ (২৩) চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানার হুসকপাড়ার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের (লোকোমাস্টার, গার্ড, টিটিই) ডাকা কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবার সারাদেশের মতো রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনেও ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় কিছু যাত্রী রাজশাহী রেল স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) কক্ষের চেয়ার-টেবিল ভেঙে ফেলে। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে ভীতি এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দেয়। পরে এ ঘটনায় রাজশাহী রেলওয়ে থানায় একটি মামলা রুজু হয়।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান জানান, এ ঘটনার পর আরএমপির নগর বিশেষ শাখা (সিটিএসবি) ও সাইবার ক্রাইম ইউনিট দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত করার কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করে ঘটনার মূলহোতা সুমনকে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে আরএমপি ও রাজশাহী রেলওয়ে থানা পুলিশ আসামি সুমনকে গ্রেপ্তারের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানাকে অবহিত করে। এসময় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি টিম মঙ্গলবার রাতেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে সুমন আহম্মেদকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে রাজশাহী রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।

রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান জানান, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় স্টেশন মাস্টার শহিদুল আলম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সে মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র লওয সদর থ ন র লওয় ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

কোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি

আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে কেবল আইন ও দেশের প্রতি। নির্বাচনকালীন পুলিশের আচরণ হতে হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, ন্যায়নিষ্ঠ ও পেশাদার।’

শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পুলিশ লাইনসের ড্রিলশেডে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) ও রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের যৌথ আয়োজনে এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের মূল দায়িত্বে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পেছনে পুলিশ সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। তিনি পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করে বলেন, ‘যে সরকারই আসুক না কেন, পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে আইন অনুযায়ী কাজ করা। কেউ যেন আগাম ধারণা করে বা কাউকে খুশি করার জন্য দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত না হয়। একজন পুলিশ সদস্য হয়তো কাউকে ফেভার করলে তা হয়তো প্রকাশ পাবে না, কিন্তু একদিন নিজের বিবেকের কাছেই তাঁকে জবাব দিতে হবে।’

পুলিশের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সততা ও পেশাগত দায়িত্ববোধ—এ কথা উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, পুলিশের কাজ কঠিন। আসামি ধরতে গেলে বাধা বা হুমকি আসে, এমনকি আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়। তবু দায়িত্ব থেকে পিছু হটলে চলবে না।

পুলিশ বাহিনীর দেড় শ বছরের ঐতিহ্য ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে আইজিপি বলেন, ‘এই পুলিশ বাহিনী একদিনে গড়ে ওঠেনি। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টে পুলিশ কঠিন এক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। ধাপে ধাপে সেই পরিস্থিতি অতিক্রম করে আজকের অবস্থানে এসেছে। যদিও এখনো কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে, তবু একসময় সমালোচিত সেই পুলিশ বাহিনী আজ নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।’

পুলিশের প্রতি সমাজের প্রত্যাশা ও সমালোচনার কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, ‘এত কিছুর পরও পুলিশ দায়িত্ব থেকে সরে যায়নি, এটাই পুলিশের শক্তি।’

আগামী নির্বাচনকে পুলিশের জন্য একটি ‘বড় পরীক্ষা’ ও ‘সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করে আইজিপি অতীতের ভুল সংশোধন করে সততা ও পেশাদারির মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনের আহ্বান জানান।

এর আগে আইজিপি বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের কর্মপরিবেশ ও বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং তা সমাধানের আশ্বাস দেন।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান। রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী রেঞ্জ, আরএমপি এবং রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত পুলিশের সব ইউনিটের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি