গাজীপুরে ডাকাতি: হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে লুটপাট
Published: 1st, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রধারী ১২-১৪ জনের একটি ডাকাত দল দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বাড়ির মালিকের হাত-পা বেঁধে রেখে ৫০ হাজার টাকা, ৮ ভরি স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
শনিবার ভোর ৩টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিণ বারতোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাজীব আহমেদ শাওন খানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার রাজীব আহমেদ শাওনের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আত্মীয়স্বজন ওই বাড়িতে এসেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় সবাই চলে যান। এরপর গভীর রাতে মুখোশধারী ডাকাত দল দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে লুটপাট চালায়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে দরজা খুলে যায়। ১২-১৪ জনের অস্ত্রধারী দল ঘরে ঢুকে রাজীব ও তার স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর তারা বাড়ির চারটি কক্ষ তন্ন-তন্ন করে খুঁজে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কথা বলতে নিষেধ করে।
রাজীব আহমেদ শাওনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার বলেন, ডাকাতরা আমার স্বামীর হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে চারটি রুমের আলমারি খুলে ৫০ হাজার টাকা ও ৮ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। যাওয়ার সময় তারা হুমকি দেয়, ‘আরেকটা বাড়িতে ডাকাতি করব, কাউকে যেন ফোন না দাও’।
রাজীব হাসান খান জানান, আমাদের বাড়ির বারান্দার গ্রিলে ভেতর থেকে তালা দেওয়া ছিল। গভীর রাতে ডাকাত দল তালা ভেঙে বারান্দায় প্রবেশ করে এবং শক্ত কিছু দিয়ে কাঠের দরজা ভেঙে ফেলে। তারা আমার হাত-পা বেঁধে ফেলে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তবে ডাকাতিকালে কাউকে মারধর করেনি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।