শারীরিক অসুস্থতার কারণ গত এক বছর মঞ্চে ওঠেননি বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার মঞ্চে গান গাইতে ওঠেন সোয়া এক ঘণ্টা গান গেয়ে দর্শকদের মজিয়ে রাখেন। কিন্তু এ সময় হঠাৎ মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবিনা। দ্রুত তাকে গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। গণমাধ্যমকে খবরটি জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী জাহাঙ্গীর সাইদ।
তিনি জানান, সাবিনা ইয়াসমীনের ভার্টিগো সমস্যা আছে। মঞ্চে গান গাইতে গাইতে ভার্টিগোর সমস্যায় পড়েন। মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড হাত ধরে রাখতে পারছিলেন না। এরপর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাবিনা ইয়াসমীন এখন ভালো আছেন।
‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমীন: আমি আছি থাকব’ শীর্ষক এই পরিবেশনার মাধ্যমে এক বছরের বিরতি ভেঙে শুক্রবার মঞ্চে ফেরেন এই শিল্পী। এইচএসবিসি বাংলাদেশের এই আয়োজনে শনিবারও একই মঞ্চে গাইবার কথা ছিল তার। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে গান শোনাবেন এ শিল্পী।
আরো পড়ুন:
ইসলাম ধর্মের রীতি মেনে বিয়ে করবেন রাখি
সৌদির ‘জাতীয় সংগীতে’ সুরারোপ করবেন মার্কিন সুরকার
শনিবারের অনুষ্ঠানে সাবিনা ইয়াসমীন গাইবেন কি না, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর জানান, সাবিনা ইয়াসমীন জানিয়েছেন তিনি গাইবেন। তবে মিউজিশিয়ান আর আয়োজকেরা বলছেন, আপাতত তার বিশ্রামে থাকা জরুরি।
২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শো করেন সাবিনা ইয়াসমীন। এরপর আর তাকে মঞ্চে দেখা যায়নি। ১৯৬২ সালে রবীন ঘোষের সুরে প্রথম ছোটদের গানে কণ্ঠ দেন তিনি। এরপর একের পর এক সিনেমায় গেয়েছেন, প্রকাশিত হয়েছে অ্যালবাম।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত