পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
Published: 1st, February 2025 GMT
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) শাখার নেতা সালমান ফারসি শোভনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তিনি পাবিপ্রবির জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠ থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রকাশনা উৎসব চলছিল। ওই ছাত্রলীগ নেতা বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে এডওয়ার্ড কলেজে ঘুরতে যান। এ সময় কিছু ছেলে তাকে চিনতে পেরে আটক করেন। তারা জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ কল করে জানান যে, নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে শোভনকে আটক করে।
সালমান ফারসি শোভনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে তিনি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ঘুরতে যান৷ এ সময় ছাত্র শিবিরের এক নেতা তাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। এ সময় পেছন থেকে ১৫-২০ জন ছেলে এসে শোভনকে এলোপাথারি মারতে থাকেন। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তারা শোভনের দুটি মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল রেখে দেন।
এ বিষয়ে পাবনা শহর ছাত্র শিবিরের সভাপতি ফিরোজ হোসেন বলেছেন, “এডওয়ার্ড কলেজে আমাদের প্রকাশনা উৎসব চলছিল। এ সময় মাঠে আমরা ঝামেলা দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শিবিরের কেউ জড়িত নন। আমাদের প্রোগ্রামে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্যই পুলিশকে ফোন দেওয়া হয়। উনার ফোন, বাইক কে নিয়ে গেছে, সে বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।”
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস ছালাম বলেছেন, “যাকে আটক করা হয়েছে, সে পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের পদধারী নেতা। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। যদি ওর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে মামলা হবে। কোনো অভিযোগ না পাওয়া গেলে, আমরা অন্য ব্যবস্থা নেব। ওর ফোন আর বাইকের বিষয়টা আমরা দেখছি। যারা আমাদের ফোন দিয়েছে, তাদের দুই জনকে ডেকেছি। আমরা তাদের সাথে এ বিষয় কথা বলব।”
ঢাকা/আতিক/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’