সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে ভক্তি ও প্রার্থনায় বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার পঞ্চমী তিথিতে অগণিত ভক্ত তাঁর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানিয়েছেন তারা। 

এবার বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকামতে রোববার সকাল থেকে পঞ্চমী তিথি শুরু হওয়ায় আগের দিনই রামকৃষ্ণ মিশন, মঠসহ কোনো কোনো মণ্ডপ ও মন্দিরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছিল। এসব মন্দিরের অনেকটাতে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো পূজা করা হয়।

সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সারাদেশের মন্দির ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাড়ম্বরে পূজার আয়োজন করা হয়। মণ্ডপে মণ্ডপে পূজার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াও হাতেখড়ি, প্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যারতি, আলোকসজ্জা ও মেলা বসেছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপের বাণী-অর্চনায় সমবেত হয়েছিলেন নানা সাজে সজ্জিত নারী-পুরুষ, আবালবৃদ্ধবনিতা ও শিশু-কিশোর। আবহমান বাঙালির অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ করে হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষও উৎসবে যোগ দিয়েছেন।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সরস্বতী 
পূজায় সকাল থেকে দিনভর হাজারো পূজারি ও ভক্ত উপস্থিত হন। গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ মন্দিরে দ্বিতীয় দিনের মতো সরস্বতী পূজা ঘিরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। সেখানেও বিপুলসংখ্যক ভক্ত

দেবী দর্শন ও পূজা 
উপভোগ করেন। রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম মণ্ডপেও পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐতিহ্যবাহী সরস্বতী পূজা ঘিরে ব্যাপক আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশ ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানকার জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন হলে সাড়ম্বরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়। জগন্নাথ হলে কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ ছাড়াও এখানকার খেলার মাঠে ৭২টি বিভাগ, ইনস্টিটিউট, অনুষদ মিলিয়ে ৭৪টি পূজামণ্ডপ স্থাপন করা হয়। প্রতিটি বিভাগের মণ্ডপ তৈরি করা হয় নিজস্ব বিভাগীয় থিম অনুযায়ী। চারুকলা অনুষদ এবারও জগন্নাথ হলের পুকুরে মঞ্চ নির্মাণ করে ব্যতিক্রমী পূজার আয়োজন করে। 
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সকালে জগন্নাথ হল মাঠের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। 
জবিতে এবারও নারী পুরোহিত জবি প্রতিনিধি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মণ্ডপে এবারও সরস্বতীর পূজার পৌরোহিত্য করেছেন এক নারী। গতকাল ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সমাদৃতা ভৌমিকের পরিচালনায় পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি দেন ভক্তরা। এর মাধ্যমে সরস্বতী পূজায় কোনো নারী দ্বিতীয়বার পূজা পরিচালনা করলেন। এবার জবিতে ৩৭ মণ্ডপে সরস্বতী পূজা করা হয়।
সমাদৃতা ভৌমিক বলেন, শাস্ত্রমতে কোথাও বলা নেই যে নারী পৌরোহিত্য করতে পারবে না। তারপরও নারীরা পৌরোহিত্য করতে উৎসাহ পায় না। তাদের এই জড়তা কাটাতে এই প্রয়াস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে উৎসবমুখর পরিবেশে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত 

 সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বন্দরে উৎসবমুখর পরিবেশে  ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত হয়েছে ।

এ উপলক্ষে শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বন্দর উপজেলা প্রশাসন ও সমবায় উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শেষে উপজেলা মিলনায়তনে   আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায়  বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সরকার আশরাফুল ইসলাম, দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা মতিউর রহমান, উপজেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিনসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

বক্তারা বলেন, সমবায় হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।

তারা আরও বলেন, সমবায় কেবল আর্থিক সংগঠন নয়, এটি একটি মানবিক আন্দোলনযা একে অপরের প্রতি সহযোগিতা ও ন্যায্য বণ্টনের মানসিকতা তৈরি করে।

আলোচনা সভায় বক্তারা সরকারি বিভিন্ন নীতি সহায়তার মাধ্যমে সমবায় খাতকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, সঠিক নেতৃত্ব ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে সমবায় আন্দোলন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

অনুষ্ঠানের শেষে  সফল সমবায় সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।

র‌্যালিতে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সমবায় সমিতির প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ  বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর তফসিল সোমবার 
  • বন্দরে উৎসবমুখর পরিবেশে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত