হাবিপ্রবিতে শিবিরের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত
Published: 4th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) দিনব্যাপী শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীতে মহাসড়ক সংলগ্ন বটতলায় এ উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি। উৎসবটি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ৮টা পর্যন্ত স্থায়ী ছিল বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সংগঠনটির দেওয়া স্টলে শিবিরের সাংগঠনিক ও অন্যান্য ইসলামিক বই রয়েছে। এখানে কিছু বই বিক্রি এবং কিছু বই প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছিল। লেখক সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদীর বইয়ের আধিক্য ছিল।
এ বিষয়ে হাবিপ্রবি শাখা শিবিরের সভাপতি শেখ রিয়াদ বলেন, “আমরা একটি প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করেছি। এতে আমাদের সমর্থক, কর্মী, সাথী ও সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এসেছেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিই বেশি ছিল। তারা আমাদের কার্যক্রমকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “উৎসব উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারকে কল করেছিলাম। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে প্রোগ্রাম করলে সমস্যা নেই।’ প্রক্টর স্যারও কিছুক্ষণ আগে এসেছিলেন, পরিদর্শন করে গেলেন।”
অন্যান্য রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, “ছাত্রদলের আহ্বায়ক আসতে চেয়েছেন। ছাত্রদলের দু-একজন এসে ঘুরে গেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা আছেন, তারাও এসেছিলেন। আমরা তাদের বই উপহার দিয়েছি।”
ঢাকা/সংগ্রাম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল।
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়