১৫ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করেই নির্বাচন হতে হবে: গোলাম পরওয়ার
Published: 4th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের ‘জঞ্জাল’ পরিষ্কার করেই আগামী সাধারণ নির্বাচন হতে হবে বলে মন্তব্য করছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা মহানগর সংলগ্ন হরিণটানা থানাধীন আরাফাত নগর ইউনিট জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪, ১৮ ও ২৪ এর মতো নির্বাচন আর দেখতে চায় না। অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই নির্বাচন হতে হবে পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল রাষ্ট্রীয় অর্গানগুলো সংস্কার করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সেইসঙ্গে যারা বিগত দেড় দশকে লুটপাট, খুন, দুর্নীতি, অনিয়ম করেছেন, তাদের ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগামী নির্বাচন হতে হবে ৫ আগস্টের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি জাতীয় ঐক্যের নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে।
জামায়াতের আমীর ডা.
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরো বলেন, কথিত মানবতাবিরোধী সাজানো অপরাধের নামে জামায়াতের যে সকল নেতা হত্যার শিকার হয়েছেন, আমরা তাদের কাছে ঋণী। তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আজকে যেই বাংলাদেশ হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে শহীদরাও সেই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। সুতরাং সেই বিচার হতেই হবে। জুডিশিয়াল ক্যু করে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সেই জুডিশিয়াল ক্যু’র সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ কখনো মেনে নেবে না। আমরা সবাই ঐক্যমতের ভিত্তিতেই চলতে চাই। যারা কিছু কিছু সুবিধা নিচ্ছেন, তারা আমাদের সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন চাই, তা হবে সুষ্ঠুভাবে, সঠিকভাবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের সরকার গঠন করতে চাই।
জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার জনগণের সকল অধিকার; বাক স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মিডিয়ার স্বাধীনতা, শিক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। দেশের সর্বত্র এবং প্রশাসনের মধ্যে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
জাতীয় ঐক্য গড়ার পদক্ষেপ হিসেবে জামায়াতের মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বশীল ও ইউনিট নেতাদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
হরিণটানা থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুল গফুরের সভাপতিতত্বে ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম এবং আমির হোসেনের পরিচালনায় কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজি ও ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মোক্তার হোসাইন।
অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সোনাডাঙ্গা থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান নাঈম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আমীর মশিউর রহমান রমজান, শ্রমিক নেতা কাজী মাহফুজুর রহমান, জামায়াত নেতা সাখাওয়াত হোসেন লিখন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মতিউর রহমান, ডা. ফজলুর রহমান, ডা. মো. ইসমাইল হোসেন, মোহাম্মদ শহিদুল আলম, মাওলানা আফজাল হোসাইন, রেদওয়ান উল্লাহ ইব্রাহিম প্রমুখ।
বিএইচ
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র ইসল ম র স র রহম ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।