দুই লাখ মানুষের ভোগান্তি দূর করুন
Published: 5th, February 2025 GMT
সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নের জন্য দেশে অসংখ্য সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক নদ–নদীর সর্বনাশও হয়েছে। সেতুর প্রস্থ ছোট করে নদ–নদী সংকুচিত করা হয়েছে, উচ্চতা কম রেখে নৌপথের ক্ষতি করা হয়েছে। আবার এমন ঘটনাও আছে, নদ–নদী খনন করতে গিয়ে ভেঙে পড়েছে সেতুও। সাতক্ষীরায় পাঁচটি সেতুর ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে। নদ খননের কাজ শেষ হলেও সেতুগুলো আর ঠিক করছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকগুলো গ্রামের মানুষ। বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, সাতক্ষীরার ওপর দিয়ে বয়ে চলা ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মরিচ্চাপ নদের ওপর ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৯টি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এসব সেতু এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে গতি সঞ্চার করেছিল। সেতুগুলো দিয়ে সাতক্ষীরা সদরের আশপাশের উপজেলার সঙ্গে যাতায়াত সহজ হয়েছিল।
ব্যবসা, বিশেষ করে মৎস্য ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই বছর আগে মরিচ্চাপ নদ খনন করার পর সেতুগুলো ভেঙে পড়তে থাকে। খননের পর নদের প্রশস্ততা বেড়ে যাওয়ায় সেতুগুলো আর টেকেনি। কারণ, সেতুগুলোর দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ থেকে ৬০ ফুট; কিন্তু নদ খনন করা করে প্রস্থ করা হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ ফুট।
আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বক্তব্য, যখন সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল, তখন মরিচ্চাপ নদ ভরাট হয়ে প্রস্থ ছোট হয়ে গিয়েছিল। খনন করে প্রস্থ বেশি করায় নদের ওপর নির্মিত সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে। এখন ১০০ ফুটের বেশি দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করতে হবে। তাঁদের নতুন সেতু নির্মাণের প্রকল্প নেই। তা ছাড়া ৬০ ফুটের ওপর সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তাদের কাছে এসব স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এলজিইডির সাতক্ষীরা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, সেতুগুলো তাঁদের অধীন নয়। তারপরও প্রশাসন থেকে বলায় একটি সেতু নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
গোটা বিষয়ে আমরা দেখছি, প্রথমে সেতুগুলো নির্মাণ করেছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এরপর নদ খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখন সেতুগুলো নির্মাণের প্রস্তাব যাচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। সেতুর শ্রেণিবিভাগ অনুসারে একেক সংস্থা একেক ধরনের সেতু নির্মাণ করে থাকে। কিন্তু সেতু নির্মাণ ও নদ খননে যে সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই, তা বোঝাই যাচ্ছে। তাহলে শুরুতে নদ খননের কাজটি আগে হতো, এরপর সেতুগুলো নির্মিত হতো।
পাঁচটি সেতু ভেঙে পড়ায় হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ দুই লক্ষাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা আশা করব, সেতুগুলো নির্মাণে এলজিইডি আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর র জন য র ওপর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস