আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ সংশোধন ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা চূড়ান্ত না করলে আবাসন খাতের সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব। তবে কী ধরনের আন্দোলনে যাবেন সেই বিষয়ে স্পষ্ট করেননি তারা। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন রিহ্যাব নেতারা। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিহ্যাব সভাপতি মো.

ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের করা নতুন ড্যাপে ভবনের উচ্চতা কমানোর কারণে আবাসন খাতে নতুন বিনিয়োগ থমকে গেছে। উদ্যোক্তারা নতুন প্রকল্প নিতে পারছে না। ফলে কাজ না থাকায় অনেকেই বেকার হয়ে পড়ছেন। এই বেকার জনগোষ্ঠীর অনেকে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন।

তিনি বলেন, ড্যাপ আইন প্রণয়নের পর রিহ্যাবের পক্ষ থেকে ড্যাপ ও নির্মাণ বিধিমালা নিয়ে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা ইমারত বিধিমালা বাস্তবায়ন করা না হলে, জমির মালিকসহ অংশীজনদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

নতুন ড্যাপের কারণে ঢাকা মহানগরের ৮০ শতাংশ অপরিকল্পিত থেকে যাবে এমন মন্তব্য করে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, জনসংখ্যাবহুল এ দেশে কোনোভাবেই ভবনের উচ্চতা কমানো কাম্য নয়। উচ্চতা কমে যাওয়ার কারণে শহর একটা মরণফাঁদে পরিণত হতে যাচ্ছে। কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে বহু মানুষের মানুষের প্রাণহানি হবে। উদ্ধারকর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারবেন না। 

এই বৈষম্যমূলক ড্যাপের জন্য কিছু পরিকল্পনাবিদ নিজেদের স্বার্থ হাসিলে মায়াকান্না করছেন এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রায় আড়াই বছর আগে বৈষম্যমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই ক্ষোভ জানাচ্ছেন জমির মালিকেরা। ড্যাপ সংশোধনের জন্য রিহ্যাব সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসংখ্যবার সভা করেছে। নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আবাসন ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

শহরকে বিস্তৃত করার পরামর্শ দিয়ে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, অবকাঠামোতগত সুবিধাগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। তাতে শহরের পরিধি বাড়বে।
 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।

বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।

নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ