৪৩টি মন্ত্রণালয়কে ২৫টিতে কমিয়ে আনার সুপারিশ
Published: 5th, February 2025 GMT
দেশে বর্তমানে মোট ৪৩টি মন্ত্রণালয় ও ৬১টি বিভাগ রয়েছে। এ মন্ত্রণালয়গুলোকে যুক্তিসঙ্গতভাবে কমিয়ে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়কে মোট ২৫টি মন্ত্রণালয় ও ৪০টি বিভাগে পুনর্বিন্যাস করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
এছাড়া মন্ত্রণালয়কে পাঁচটি গুচ্ছে বিভক্ত করার কথা জানিয়েছে। কমিশন সকল মন্ত্রণালয়কে সমপ্রকৃতির পাঁচটি গুচ্ছে বিভক্ত করারও সুপারিশ করছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে যে পাঁচটি গুচ্ছে বিন্যস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হলো (ক) বিধিবদ্ধ প্রশাসন (খ) অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য, (গ) ভৌত
অবকাঠামো ও যোগাযোগ (ঘ) কৃষি ও পরিবেশ ও (ঙ) মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের দপ্তরগুলোর সাংগঠনিক ও জনবল কাঠামো সংস্কারে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্যোগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের দপ্তরগুলোর সাংগঠনিক ও জনবল কাঠামো পর্যালোচনা করতে হবে। তারা তাদের সুপারিশ ও প্রস্তাব স্থায়ী জনপ্রশাসন
সংস্কার কমিটির কাছে পাঠাবে। কমিশন তা পর্যালোচনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকার প্রধানের কাছে পেশ করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে ওষুধ নেই, চিকিৎসক নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। ফলে তেমন একটা রোগীও নেই। এই ‘নাই নাই’ হাসপাতালটির নাম মাস্টারদা সূর্য সেন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়ার এমন নমুনা আমাদের হতাশ করে। দেশজুড়ে এ রকম আরও চিত্র আমরা দেখতে পাই, যা আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেয় না।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ১০ শয্যার হাসপাতালটির মূল সমস্যা জনবলসংকট। ১৬টি পদের ১টিতেও স্থায়ী জনবল পদায়ন করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে প্রেষণে এসে মাত্র তিনজন কর্মচারী (একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন মিডওয়াইফ ও একজন আয়া) সপ্তাহে কয়েক দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি জরুরি প্রসূতিসেবাকেন্দ্র, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, ডাক্তার নেই এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম এখন প্রায় স্থবির।
হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় মাস ধরে। এ পরিস্থিতিতে একজন রোগী কীভাবে এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবেন? যেখানে হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডে জরুরি প্রসূতিসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা লেখা, সেখানে মূল ফটকে তালা ঝোলানো। এটি জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। হাসপাতালটি চালু না থাকায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল বা চট্টগ্রাম শহরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয় তো বটেই, চরম ভোগান্তিরও শিকার হতে হয় মানুষকে।
যে মিডওয়াইফরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা জানান, এখন মাসে মাত্র চার-পাঁচজন প্রসূতি সেবা নিতে আসেন, যেখানে আগে শতাধিক প্রসূতি সেবা পেতেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তবু নিয়মিত বেতন পাওয়ার আশায় তাঁরা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, তাঁরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবলসংকটের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিতে হবে? জনবল নিয়োগ, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বিদ্যুতের ব্যবস্থা কার্যকর করা—সব ধরনের সংকট দূর করতে হাসপাতালটির দিকে আন্তরিক মনোযোগ দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।