যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালনার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
Published: 6th, February 2025 GMT
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সংস্কারের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে সংস্থাটি পরিচালনার পরিকল্পনাও করছে তারা। এর বিনিময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাবে না যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং রয়টার্সের হাতে আসা এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের নথিপত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের আগেই ট্রাম্পের কাছে ওই নথি দেওয়া হয়েছিল। তাতে সুপারিশ করা হয়েছে, দ্রুত ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে। এ ছাড়া ২০২৭ সালে সংস্থাটির বর্তমান প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুসের মেয়াদ শেষের পর নতুন প্রধান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার নাম ঘোষণার জন্য চাপ দিতে হবে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পরপরই ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ প্রত্যাহারের জন্য নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর জেরে ২০২৬ সালের জানুয়ারি নাগাদ সবচেয়ে বড় অর্থদাতাকে হারাতে যাচ্ছে সংস্থাটি। করোনা মহামারিকে ডব্লিউএইচও ভুলভাবে ব্যবস্থাপনা করেছে বলে অভিযোগ আনা হয় ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংস্থাটি।
তখন থেকে ট্রাম্প বলে আসছেন, ডব্লিউএইচওকে ‘পরিষ্কার’ করা হলে, যুক্তরাষ্ট্র আবার সংস্থাটিতে ফিরে আসবে। তবে এর জন্য ডব্লিউএইচওকে কী করতে হবে, তা খোলাসা করে বলেননি তিনি। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর থেকে ডব্লিউএইচও সংস্কার প্রস্তাবটি আলোচনাধীন। তবে এই প্রস্তাবের অন্য সুপারিশগুলো ট্রাম্প আমলে নেবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুনট্রাম্পের পথে হাঁটল আর্জেন্টিনাও, ডব্লিউএইচও থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা৭ ঘণ্টা আগেদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যপদ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে আর্জেন্টিনাও। বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ম্যানুয়েল অ্যাদরনি বলেন, আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলে। স্বাস্থ্যবিষয়ক, বিশেষ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামলাতে ডব্লিউএইচওর ভূমিকা নিয়ে গভীর মতভিন্নতাগুলোকে কেন্দ্র করে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনট্রাম্প ডব্লিউএইচওতে আবার যোগ দেওয়া নিয়ে ভাববেন২৬ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।