বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সংস্কারের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে সংস্থাটি পরিচালনার পরিকল্পনাও করছে তারা। এর বিনিময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাবে না যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং রয়টার্সের হাতে আসা এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের নথিপত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের আগেই ট্রাম্পের কাছে ওই নথি দেওয়া হয়েছিল। তাতে সুপারিশ করা হয়েছে, দ্রুত ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে। এ ছাড়া ২০২৭ সালে সংস্থাটির বর্তমান প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুসের মেয়াদ শেষের পর নতুন প্রধান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার নাম ঘোষণার জন্য চাপ দিতে হবে।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পরপরই ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ প্রত্যাহারের জন্য নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর জেরে ২০২৬ সালের জানুয়ারি নাগাদ সবচেয়ে বড় অর্থদাতাকে হারাতে যাচ্ছে সংস্থাটি। করোনা মহামারিকে ডব্লিউএইচও ভুলভাবে ব্যবস্থাপনা করেছে বলে অভিযোগ আনা হয় ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংস্থাটি।

তখন থেকে ট্রাম্প বলে আসছেন, ডব্লিউএইচওকে ‘পরিষ্কার’ করা হলে, যুক্তরাষ্ট্র আবার সংস্থাটিতে ফিরে আসবে। তবে এর জন্য ডব্লিউএইচওকে কী করতে হবে, তা খোলাসা করে বলেননি তিনি। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর থেকে ডব্লিউএইচও সংস্কার প্রস্তাবটি আলোচনাধীন। তবে এই প্রস্তাবের অন্য সুপারিশগুলো ট্রাম্প আমলে নেবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুনট্রাম্পের পথে হাঁটল আর্জেন্টিনাও, ডব্লিউএইচও থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা৭ ঘণ্টা আগে

দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যপদ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে আর্জেন্টিনাও। বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ম্যানুয়েল অ্যাদরনি বলেন, আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলে। স্বাস্থ্যবিষয়ক, বিশেষ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামলাতে ডব্লিউএইচওর ভূমিকা নিয়ে গভীর মতভিন্নতাগুলোকে কেন্দ্র করে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনট্রাম্প ডব্লিউএইচওতে আবার যোগ দেওয়া নিয়ে ভাববেন২৬ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ