ঢাকার সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজিব ও তার ছোটো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফখরুল আলম সমরের পৈতৃক বাসভবন ‘রাজ মঞ্জুরি’তে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে ধাওয়া দিয়ে হটিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, হামলা করে আগুন দিলে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন শঙ্কা থেকেই বাধা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সাভারের একদল ছাত্র-জনতা ‘মার্চ টু মঞ্জুরি’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরপর বিকেলে সাভারের পাকিজা মোড়ে তারা জড়ো হন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা হেমায়েতপুরের রাজিব-সমরের পৈতৃক বাসভবন রাজ মঞ্জুরির সামনে আসেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজ মঞ্জুরির সামনে এসে হ্যান্ডমাইকে দেশ থেকে সকল স্বৈরাচার বিতারণ ও স্বৈরাচারের আস্তানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় ‘শহীদদের অবদান বৃথা যেতে দেওয়া হবে না’ স্লোগান দেন তারা। এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতা রাজ মঞ্জুরির প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে জানলার কাচ ভাঙচুর করেন এবং ভবনের বাইরে একটি অংশে আগুন দেওয়ার উদ্যোগ নেন। তখন স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন। 

এ সময় উভয় পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে সেখানে স্থানীয় আরো প্রায় শতাধিক লোক জড়ো হন। তারা ভাঙচুর করতে আসা ছাত্র-জনতাকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেন। 

মিজানুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কিছু লোক ওই বাড়িতে আগুন দিতে আসে। বাড়িটিতে আগুন দিলে তা আশপাশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরা এটি হতে দেব না, তাই তাদের সরিয়ে দিয়েছি।’’

হামলায় অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণভাবে আমরা ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। তবে রাজিবের আত্মীয়স্বজন ও পেটুয়া বাহিনীর সদস্যদের একটি অংশ নিজেরা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে।’’

গেল বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন মঞ্জুরুল আলম রাজিব ও তার ছোটো ভাই ফখরুল আলম সমর। তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতার ওপর হামলার একাধিক মামলা রয়েছে।

তারা//

তারা//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র জনত র ল আলম

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা