ঘরের ছেলে তোরেসের হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল ভ্যালেন্সিয়া
Published: 7th, February 2025 GMT
আবারও বার্সেলোনার সামনে ভ্যালেন্সিয়া, আবারও আরেকটি গোল উৎসব। মাত্র ১২ দিন আগে লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল হান্সি ফ্লিকের বার্সা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রাতে স্প্যানিশ কোপা দেল রে’র কোয়ার্টার ফাইনালে ভ্যালেন্সিয়াকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সেমিফাইনালে পৌঁছেছে কাতালান জায়ান্টরা।
এই ম্যাচে বার্সার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মূল কারিগর ফেরান তোরেস। সাবেক ও প্রথম ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে মাত্র ৩০ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। তাতেই নিশ্চিত হয় বার্সার বিশাল ব্যাবধানের জয়। তোরেসের জন্মস্থান ভ্যালেন্সিয়ার ফয়েস শহর। নিজের শহরে শৈশবের ক্লাবের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্সের পরও অবশ্য উদযাপন করেননি তোরেস। উল্টো প্রতি গোলের পরই হাত তুলে দর্শকদের কাছে ক্ষ্মাপ্রার্থনা করেছেন।
আরো পড়ুন:
ভিনিসিয়ুসকে পেতে আল আহলির চোখ ছানাবড়া হওয়ার মতো প্রস্তাব
এমবাপের জোড়া গোলে টেবিলের চূড়ায় রিয়াল
ভ্যালেন্সিয়ার ঘরের মাঠে মাস্তেলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই বার্সেলোনা ছিল আক্রমণাত্বক। তোরেস প্রথম গোলটি করেন ২ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে। এরপর ১৭ মিনিটে লামিন ইয়ামালের শট পোস্টে লেগে ফিরলে সেটি গোলে পরিণত করেন তিনি। মাত্র ৫ মিনিট পর ফারমিন লোপেজ তৃতীয় গোলটি করেন।
ম্যাচেরে ৩০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে এক দারুণ শটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তোরেস। বিরতির পর আক্রমণের গতি কিছুটা কমালেও, ৫৯ মিনিটে ইয়ামাল ভ্যালেন্সিয়ার গোলকিপারের ভুলে ব্যবধান ৫-০ করতে ভুল করেননি।
বর্তমানে ভ্যালেন্সিয়া লা-লিগা টেবিলের নিচ থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে দুবারের লা লিগা চ্যাম্পিয়ন এবং দুবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ রানার্সআপরা কি না এখন অবনমন (লা লিগায়) এড়ানোর চ্যালেঞ্জের সামনে।
ম্যাচ পরবর্তী সাক্ষাৎকারে তোরেস বলেন, “মাঠের বাইরে আমি ভ্যালেন্সিয়ার একজন সাধারণ ভক্ত। আমার শৈশবের ক্লাবকে এমন অবস্থায় দেখতে কষ্ট লাগে। আমি তাদের শুভকামনা জানাই।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প য ন শ ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।