চূড়ান্ত হিসাবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমেছে। মাথাপিছু আয়ও কমেছে।

সাময়িক হিসাবে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। চূড়ান্ত হিসাবে তা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে ৪ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় কমে ২ হাজার ৭৩৮ ডলারে নেমে এসেছে। সাময়িক হিসাবে তা ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।

রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ বিষয়ক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আরো পড়ুন:

স্বর্ণের দাম বাড়ল, বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর

জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এল ২১৮ কোটি ডলার  

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা হয়। সভায় অর্থ উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, “এই সভায় ছয় মাসের অর্থনীতি নিয়ে রিভিউ করা হয়েছে। এই মাসে কী অর্জন হয়েছে; সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

সভায় জানানো হয়, চূড়ান্ত হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। জিডিপি আকার দাঁড়িয়েছে ৪৫০ বিলিয়ন ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছর শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে; শেষ হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ওই অর্থবছর শেষ হওয়ার সাত মাস নয় দিন পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, আকার ও মাথাপিছু আয়ের চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করল সরকার।

এতদিন এক অর্থ বছরে দুই বার জিডিপির তথ্য প্রকাশ করত সরকারের হিসাব গণনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের প্রথম ছয়-সাত মাসের তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে প্রথমে সাময়িক হিসাব দেওয়া হত। পরে পুরো বছরের তথ্য নিয়ে প্রকাশ করা হত জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব।

রবিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিবিএসের সেই চূড়ান্ত হিসাবই প্রকাশ করেছেন।

এর আগে গত বছরের ২১ মে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করে পরিসংখ্যান ব্যুরো। তাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হয়েছে বলে জানানো হয়।

অর্থবছরের সাত মাস (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি) পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকের ওই তথ্য প্রকাশ করেছিল বিবিএস।

সাময়িক হিসাবে ওই সময় বিবিএস জানিয়েছিল, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি আকার হয়েছে ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল তখনকার সরকার।চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর; শেষ হবে আগামী ৩০ জুন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের অর্জনের খাত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে বরাবরই দেখিয়ে আসছে।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা সর্বপ্রথম ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়; পরে সংশোধিত হিসাবে তা অবশ্য ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে আসে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।

পরের বছর কোভিড মহামারির ধাক্কায় তা ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে নেমে আসে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আবার বেড়ে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠেছিল। পরের বছর ৭ শতাংশ ছাড়ালেও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আবার ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে আসে।

এদিকে, গত ৬ জানুয়ারি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। তাতে দেখা যায়, এই প্রান্তিকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ৪ দশমিক ২৩ শতাংশীয় পয়েন্ট কম।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৬ দশমিক শূন্য চার শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল দেশে।

ঢাকা/হাসান/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট র ৫ দশম ক ব ব এস বছর র সরক র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি

রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া বলেছেন, দুটি বিদেশি পরীক্ষাগারে তাঁর স্বামীর শরীর থেকে সংগৃহীত জৈবিক নমুনা পরীক্ষা করে প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাঁর শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

রাশিয়ায় ভ্লাদিমির পুতিনবিরোধী নেতা নাভালনি ৪৭ বছর বয়সে ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আর্কটিক সার্কেলে একটি কারাগারে আকস্মিকভাবে মারা যান।

নাভালনির স্ত্রী নাভালনায়া বারবার তাঁর স্বামীকে হত্যার জন্য পুতিন সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন। অবশ্য ক্রেমলিন এই অভিযোগকে ‘আজগুবি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নাভালনির মৃত্যুর আগে পশ্চিমাদের সঙ্গে বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

নাভালনায়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, ২০২৪ সালে নাভালনির শরীর থেকে গোপনে জৈবিক নমুনা বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। দুটি পরীক্ষাগার সেই নমুনা পরীক্ষা করেছে। এতে প্রমাণ পাওয়া গেছে, নাভালনিকে হত্যা করা হয়েছিল।

নাভালনায়া বলেন, দুটি ভিন্ন দেশের পরীক্ষাগারগুলো একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, অ্যালেক্সিকে হত্যা করা হয়েছে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

নাভালনায়া পরীক্ষাগারগুলোকে এই ‘অস্বস্তিকর সত্য’ সম্পর্কে তাদের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশের দাবি জানান। তবে নাভালনির শরীরে কী ধরনের বিষ পাওয়া গেছে, সেটা তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি।

নাভালনায়া বলেন, ‘এসব ফলাফল জনগুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্যই প্রকাশ করা উচিত। আমাদের সবার সত্যিটা জানার অধিকার আছে।’

নাভালনায়ার এই মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমি তাঁর এসব মন্তব্য সম্পর্কে কিছুই জানি না। এ বিষয়ে কিছু বলতেও পারব না।’

অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • জিল হোসেন মারা গেছেন, আদালতে তাঁর লড়াই শেষ হবে কবে
  • গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • কীভাবে নেট রান রেট হিসাব করা হয়, সুপার ফোর উঠতে বাংলাদেশের হিসাব কী
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন