সমবায় সমিতিতে নাগরিকেরা অর্থ জমা রাখেন, যেন প্রয়োজনে সেখান থেকে ঋণ নিতে পারেন। এর জন্য আছে সরকারি নীতিমালা। একটি অধিদপ্তরের অধীনে মাঠপর্যায়ে জেলা ও উপজেলা সমবায়ের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু নিবন্ধিত সমিতিগুলোকে তদারকির অভাব এবং ভুঁইফোড় সমিতিগুলোর কারণে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেক মানুষ। জামালপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীরা টাকা উদ্ধারে নানা কর্মসূচি পালন করলেও কোনো ফল হচ্ছে না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ভুক্তভোগী গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। বেশির ভাগই মাদারগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে পোশাকশ্রমিক, প্রবাসী ও তাঁদের স্ত্রী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক, গৃহকর্মী, দিনমজুর ও চাকরিজীবীরা আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দাবি, তাঁদের সঞ্চয়ের পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। অনেকে সারা জীবন চাকরি করে পেনশনের টাকা জমা রেখেছিলেন। সেগুলো হারিয়ে শেষ বয়সে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। অনেকে অল্প অল্প করে জমানো টাকা হারিয়ে একেবারে পথে বসেছেন। সঞ্চয় হারিয়ে টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে মারা গেছেন, এমন ঘটনাও ঘটেছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলায় নিবন্ধিত সমিতির সংখ্যা ১৬৩। ২০২২ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কারণে ৭৪টি সমিতির কার্যক্রম প্রায় বন্ধের পথে। উদ্যোক্তারা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ করে আত্মগোপনে আছেন। ওই সব সমিতির মধ্যে জেলা সমবায় কার্যালয় ২৩টি সমিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে এসব সমিতির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ঘটনায় সমালোচনা উঠেছে উপজেলা ও জেলা সমবায় কার্যালয়ের কার্যক্রম নিয়ে। প্রথম দিকে মুনাফা দিয়ে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করে সমিতিগুলো। একপর্যায়ের সমিতিগুলো ঋণদান কর্মসূচির পাশাপাশি পুরোপুরি অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। এসব কার্যক্রম প্রকাশ্যে চললেও সমবায় অধিদপ্তর বা স্থানীয় প্রশাসন কখনোই কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি টাকা উদ্ধারে সহায়তা না করে উল্টো সমিতির সদস্যদের দোষারোপ করার অভিযোগ উঠেছে, কেন সেখানে তাঁরা টাকা রেখেছেন।
জেলা সমবায় কর্মকর্তার বক্তব্য, এখানে গ্রাহকদের দায় বেশি। কোনো গ্রাহক সমিতিগুলোর বিরুদ্ধে কখনোই অভিযোগ করেননি। এখন নিবন্ধন বাতিল হলে সমিতির উদ্যোক্তাদের জন্যই ভালো হয়। তখন গ্রাহকেরা আর টাকা ফেরত পান না। উদ্যোক্তাদের চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে টাকা কীভাবে ফেরত পাওয়া যায়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে।
এতগুলো ভুঁইফোড় সমিতি গড়ে ওঠার পেছনে অবশ্যই জেলা-উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের দায় আছে। সমিতির কার্যক্রমগুলো তদারকি করা, গ্রাহকদের সচেতন করার বিষয়েও তাদের অবহেলা স্পষ্ট। যেকোনো সমিতিকে নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই করাও প্রয়োজন। আমরা আশা করব, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের সঞ্চয় কীভাবে ফেরত পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালাবে তারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমব য় ক ন বন ধ গ র হক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লর্ডসে ফাইনাল, ভেন্যু ও সময় ঘোষণা করল আইসিসি
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০২৬ আসরের দিনক্ষণ ও ভেন্যুর তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আগামী বছরের ১২ জুন থেকে শুরু হবে ১২ দলের এই টুর্নামেন্ট, যার পর্দা নামবে ৫ জুলাই লন্ডনের বিখ্যাত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ফাইনালের মধ্য দিয়ে।
মোট ৩৩টি ম্যাচ হবে ইংল্যান্ডের সাতটি ভেন্যুতে। এর মধ্যে রয়েছে—লর্ডস, দ্য ওভাল, এজবাস্টন, ওল্ড ট্রাফোর্ড, হেডিংলি, হ্যাম্পশায়ার বোল ও ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ড। আইসিসির এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়। পুরো সূচি ও ম্যাচের সময়সূচি পরে জানাবে আইসিসি।
আসন্ন বিশ্বকাপের ভেন্যু ও সূচি ঘোষণা করে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের বিত্তশালী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজন প্রতিটি দলের জন্য আবেগীয় সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ। এখানে এমন ইভেন্ট অতীতেও স্মরণীয় হয়ে আছে। ২০১৭ আসরে লর্ডস দারুণ নারী ক্রিকেটে দারুণ মাইলফলক তৈরি করেছিল, তাই ফাইনালের জন্য এরচেয়ে উপযুক্ত ভেন্যু হতে পারে না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মাধ্যমে সমর্থকদের সঙ্গে আমরাও যেমন রোমাঞ্চিত, তেমনি ২০২৮ লস অ্যাঞ্জলস অলিম্পিকে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনের জন্যও পূর্ব-প্রদর্শনী।’
???? 7 venues. One unmissable tournament ????
The ICC Women’s T20 World Cup 2026 will grace some of England’s most iconic grounds ????
✍️: https://t.co/BqtN44SMEX pic.twitter.com/UmkuBU4HL3
এই প্রথমবারের মতো নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে সর্বোচ্চ ১২টি দল। দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে দলগুলো খেলবে গ্রুপ পর্ব, এরপর নকআউট হয়ে শেষ পর্যন্ত গড়াবে ফাইনালে। আয়োজক ইংল্যান্ডসহ ইতোমধ্যে মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে আরও সাতটি দল—অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাকি চার দলকে আসতে হবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়া, যারা ছয়বার শিরোপা জিতেছে। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে একটি করে। সবশেষ ২০২৪ সালের বিশ্বকাপ হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেবার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে নিউজিল্যান্ড।