নাটোরের সিংড়া উপজেলায় রাতে ধানখেতে সেচ দেওয়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের কদমকুড়ি গ্রামের মাঠে এই ঘটনা ঘটে।

সিংড়া থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কদমকুড়ি মাঠের একখণ্ড জমির মালিকানা নিয়ে গ্রামের বাসিন্দা জমসেদ আলী ও জিয়াউর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল রাত ৮টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে সেচ দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে একই গ্রামের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোজাহেদুল ইসলাম বলেন, আহত ব্যক্তিদের প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের নাটোর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

কৃষক মাহবুব হোসেন বলেন, কদমকুড়ি মাঠের একটা জমি নিয়ে জমসেদ আলী ও জিয়াউর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর আগে একাধিকবার বিচার সালিস হয়েছে। গতকাল রাতে এক পক্ষ ধানের জমিতে সেচ দিতে গেলে অন্য পক্ষ বাধা দেয়। এ নিয়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক বলেন, সেচ দেওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা

সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।

বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।

বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।

বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’

বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ