কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বালুঘাটের টোল বক্সের ম্যানেজারকে গুলি করে টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিতে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গড়াই নদের সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতুর নিচে এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের গুলি ও টাকা লুটের ৫ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

গুলিবিদ্ধ ম্যানেজার মো. সবুজ হোসেনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে আজ সকাল থেকে তাকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি এলাকার শহিদুলের ছেলে। এ ঘটনার পর বালুঘাট বন্ধ রয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১১টার দিকে একদল অস্ত্রধারী হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে গড়াই নদের সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতুর নিচে আসে। তাদের সবার হাতে অস্ত্র ছিল। তাদের দেখেই কয়েকজন পালিয়ে যায়। এসেই তারা সেখানকার শ্রমিকদের জিম্মি করে। এ সময় একটি ট্রাক টোল দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। ভয়ে এক ব্যক্তি ট্রাকে উঠে পড়ে। এরপর টোল বক্সের ক্যাশ থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। সে সময় শ্রমিকরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ম্যানেজার সবুজের পায়ে গুলি করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা এলোপাতাড়ি কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে দ্রুত চলে যায়। 

শ্রমিকরা বলেন, সবার কাছে অস্ত্র ছিল। প্রত্যেকেই মুখোশ পরা ছিল বলে কাউকেই চেনা যায়নি।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১০টা ৫২ মিনিটে কাশেমপুরের দিক থেকে ১১ সশস্ত্র মুখোশধারী গুলি ছুড়তে ছুড়তে সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতুর নিচ দিয়ে বালু ঘাটের টোল বক্সের দিকে আসছে। তাদের প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর টোল বক্সের সামনে থাকা শ্রমিক ও ম্যানেজার সবুজকে মারধর করতে দেখা যায়। 

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ মো.

সবুজ বলেন, ‘সবার মুখে মাস্ক ছিল। তারা এসেই মারধর শুরু করে। আমার পায়ের পাতায় গুলি করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, বালুঘাটে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ছিনতাই করার জন্য তারা এ ঘটনা ঘটায়। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে গড়াই নদের ড্রেজারকৃত বালু অপসারণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রিয়াঙ্কা ব্রিকস। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বালু অপসারণের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে