দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ আরো সহজ করতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান এবং কাতারের ছয়টি শীর্ষস্থানীয় এক্সচেঞ্জ হাউজের সাথে চুক্তি করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংকটির আন্তর্জাতিক রেমিটেন্স নেটওয়ার্ক আরো শক্তিশালী হয়েছে।

এই কৌশলগত উদ্যোগের ফলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে আরো উন্নত ও ঝামেলাহীন রেমিটেন্স সেবা উপভোগ করতে পারবেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল রেমিটেন্স চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীরা এখন আরো সহজে দেশে টাকা পাঠাতে পারছেন। ব্যাংকটির অনেক নতুন পার্টনার গ্রাহকদের অ্যাপ-ভিত্তিক ক্যাশলেস ট্রানজ্যাকশনের সুবিধা দিচ্ছে, যা সুবিধাভোগী গ্রাহকদের জন্য সার্বিক ডিজিটাল এক্সপিরিয়েন্স নিশ্চিত করছে। প্রবাসীরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্র্যাক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি ব্যাংকটির ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধাও উপভোগ করতে পারছেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রমবর্ধমান নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ফলে মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দূরপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে রেমিটেন্স সুবিধাভোগীদের সংযোগ আরো উন্নত হচ্ছে।

দেশজুড়ে ১৮৯টি শাখা, ৭৪টি উপশাখা এবং ১,১১৪টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট থেকে গ্রাহকরা সহজেই নগদ অর্থ উত্তোলন করতে পারছেন। এছাড়াও, প্রবাসীরা [email protected] -এ ইমেইল পাঠিয়ে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পাচ্ছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রবাসী, এনএফসিডি, এফডি, ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলাসহ এনআরবি বন্ড ক্রয়ের সুযোগ।

ইকেওয়াইসি সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজেই ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। ব্যাংকটির ‘প্রবাসী পরিবার’ অ্যাকাউন্টের আওতায় জীবনবিমা, ফিক্সড ইন্টারেস্ট রেট এবং মাসিক পেআউট সুবিধাও নিতে পারছেন গ্রাহকরা। এছাড়াও, অফশোর ব্যাংকিং ফিক্সড ডিপোজিটেও আকর্ষণীয় ইন্টারেস্ট রেট দিচ্ছে ব্যাংকটি।

নতুন পার্টনারশিপ নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমরা শুধু গ্রাহকদের রেমিটেন্স সেবাই দিচ্ছি না, বরং ব্যাংকিংয়ে তাঁদের এক নতুন অভিজ্ঞতাও দিচ্ছি। নতুন এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর সাথে আমাদের এই পার্টনারশিপের ফলে গ্রাহকদের জন্য রেমিটেন্স সেবা আরো সহজ, ঝামেলাহীন এবং সাশ্রয়ী হবে।”

তিনি আরও বলেন, “রেমিটেন্স সেবা কেবলমাত্র শুরু। আমরা গ্রাহকদের জন্য এমন এক সম্পূর্ণ ফাইন্যান্সিয়াল ইকোসিস্টেম তৈরি করছি, যা তাঁদের সঞ্চয় থেকে শুরু করে বিনিয়োগ পর্যন্ত সকল আর্থিক বিষয়ে সহায়তা করবে। এর ফলে প্রবাসী এবং তাঁদের পরিবারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে, যা জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”

উল্লেখ্য, প্রবাসী এবং তাদের পরিবারের আর্থিক ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা এবং অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক নিজেদের রেমিটেন্স নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে।

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র হকদ র প র টন র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ