সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি: জামায়াতের আমির
Published: 22nd, February 2025 GMT
দলের কারাবন্দী নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির জন্য সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, একে একে সব জাতীয় নেতারা মুক্তি পেলেও এ টি এম আজহারুল ইসলাম বৈষম্য ও জুলুমের শিকার।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জামায়াতের জনসভায় শফিকুর রহমান এ কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, ‘তাঁকে কারাগারে রেখে বাইরে অবস্থান করা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। আমরা সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আমি নিজে গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত প্রাঙ্গণে হাজির থাকব। আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াত আমির। সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর দলের কোনো আমির লক্ষ্মীপুরে সমাবেশে যোগ দেওয়ায় সমাবেশ নিয়ে উদ্দীপনা ছিল নেতা-কর্মীদের।
সমাবেশে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তাহেরের পরিবারের প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এক বছর আগে লক্ষ্মীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারব, সেই কল্পনা করি নাই। স্বাধীনতার পর একটি গোষ্ঠী লক্ষ্মীপুরকে সন্ত্রাসী এলাকায় পরিণত করেছে। বিশেষ করে একটি পরিবার। এখন তারাও পালিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন রাজনীতি ঘৃণা করি যে রাজনীতি করতে গিয়ে দেশ থেকে পালাতে হয়। আবু সাঈদের মতো বুক পেতে মারা যাওয়াও যেন আনন্দের হয়, এমন রাজনীতি চাই।’
সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।