ক্রিয়েটর ও ভক্তদের জন্য বড় আপডেট ঘোষণা করল জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক। মেটা সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইভ ভিডিও মুছে ফেলা হবে। ব্লগ পোস্টে এমন তথ্য জানিয়েছে মেটা। নতুন নীতি বলছে, গ্রাহকের প্রোফাইল বা পেজ থেকে স্ট্রিম করা সব লাইভ ভিডিও ৩০ দিন পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরিয়ে নেওয়া হবে। অর্থাৎ গ্রাহক আর তার খোঁজ পাবে না, যদি না ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করা হয়।
২০১৬ সালে প্রথম লাইভ ভিডিও সুবিধা সচল করে ফেসবুকে। সারাবিশ্বে ফেসবুক লাইভ নামে পরিচিত ফিচারটি মুহূর্তেই কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যে তুমুল সাড়া জাগায় এবং জনপ্রিয় হয়।
লাইভ ভিডিও ফিচার ফলোয়ার্স ও বন্ধুদের সঙ্গে রিয়েল টাইম অভিজ্ঞতা বিনিময় করার সুবিধা দেয়। মেটা বলছে, ফেব্রুয়ারি থেকে লাইভ স্ট্রিম করা সব ভিডিও ৩০ দিন সময়ের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে ফেলা হবে। গ্রাহক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের ভিডিও ডাউনলোড করার সুযোগ পাবেন।
লাইভ ভিডিও ডাউনলোড
সরাসরি (লাইভ) ধারণকৃত ফেসবুক ভিডিওচিত্র ডাউনলোডের প্রয়োজনে ফেসবুক প্রোফাইল, পেজ বা মেটা বিজনেস স্যুট অপশনে যেতে হবে।
লগইন করার পর ভিডিও ট্যাব দৃশ্যমান হবে। সেখানে ওয়েব গ্রাহকরা লাইভ ট্যাব অ্যাকসেস করতে পারবেন। প্রয়োজনে ওই অংশ পছন্দের ভিডিও নির্বাচন করতে হবে। ‘ফুল স্ক্রিন’ মোডে প্রবেশ করতে হবে। তারপর ডাউনলোড ভিডিও অপশনে ক্লিক করলে কাজ হয়ে যাবে। আবার একসঙ্গে অনেক ফেসবুক ভিডিও ডাউনলোডের প্রয়োজন হলে নোটিফিকেশন আইকনে ট্যাপ করে ‘ডাউনলোড ফ্লো’ নির্বাচন করে নিতে পারবেন। নির্ধারিত তারিখ নির্বাচন করার পর ডিভাইসের অবস্থান সিলেক্ট করতে হবে। যেন ডাউনলোডযোগ্য ফাইল তৈরি করে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ভিডিও ডাউনলোড করা সহজ হয়।
আগ্রহীরা প্রয়োজনে এক বা একাধিক ভিডিও ডাউনলোড করার জন্য তাদের ফেসবুক পেজের অ্যাক্টিভিটি লগ অ্যাকসেস সুবিধা নিতে পারেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ ড ও ড উনল ড ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।