সাজেক ভ্রমণে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত
Published: 24th, February 2025 GMT
রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় করে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পাঠান মো.
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাজেক পর্যটন এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংগঠিত হওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে পর্যটকদের ভ্রমণে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের এই পর্যটন কেন্দ্রের ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকেই প্রথমে আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। পরে আগুন বাকি রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘরে একে একে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বাঘাইছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় খবর পেয়ে খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি, দীঘিনালাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১১টি ইউনিট রওনা দিলেও সাজেকে পৌঁছতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা জানান, আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকজন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। দীঘিনালা থেকে ফায়ার সার্ভিস আসতে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ জানান, এই ঘটনার পর সর্বপ্রথম ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থার কথা চিন্তা করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে। একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। কীভাবে এবং কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো তা বের করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।
তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’
প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়