ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তেলেঙ্গানার নাগারকুর্নুল জেলায় ধসে পড়া একটি সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৮ শ্রমিককে উদ্ধার প্রচেষ্টা চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলে কাদামাটির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় খনন কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

সোমবার সুড়ঙ্গের ভেতরে প্রবেশ করা বিশেষজ্ঞ দল জানিয়েছে, সেখানে কাদার স্তর আরও এক মিটার বেড়েছে এবং সুড়ঙ্গের খাঁড়ির দিকে আরও কাদা প্রবাহিত হচ্ছে। প্রচুর কাদা জমে থাকায় কেন্দ্রস্থলে পৌঁছনোই কঠিন হয়ে পড়েছে।

আরো পড়ুন:

স্যুটকেসে শাশুড়ির খণ্ডিত দেহ, নদীতে ভাসানোর আগে আটক

ভূমিকম্পে কাঁপল পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশা

তবে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যেতে বিকল্প কৌশল হিসেবে পাশ দিয়ে নতুন পথ বের করে প্রবেশের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারি যন্ত্র দিয়ে খননের ফলে সুড়ঙ্গের কাঠামোগত স্থায়িত্ব ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

এতে আটকে পড়া শ্রমিকদের পাশাপাশি উদ্ধারকর্মীদের জীবনও বিপদের মুখে পড়তে পারে। তাই সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে অভিযান চালানো হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ ক্রিস কুপার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি খুবই অনিশ্চিত, তাই ভারি যন্ত্র দিয়ে খনন করলে আরো বিপদ হতে পারে।

সুড়ঙ্গে প্রতি মিনিটে ৩,২০০ লিটার পানি ঢুকছে। ফলে বালি, পাথর ও ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে মিশে আরো কাদায় পরিণত হচ্ছে। তবে সুড়ঙ্গ থেকে পানি বের করার কাজ চলছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার তেলেঙ্গানার নাগারকুর্নুল জেলায় সেচ প্রকল্পের জন্য সুড়ঙ্গ খনন করতে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হন শ্রমিকরা। সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় তারা পৌঁছে যান ১৪ কিলোমিটার গভীরে, আর তখনই আকস্মিকভাবে ধসে পড়ে সুড়ঙ্গের ছাদ। বেশিরভাগ শ্রমিক বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও আটকে পড়েন ৮ জন। তাদের সঙ্গে উদ্ধারকারীরা এখনো পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। 

তেলাঙ্গানার মন্ত্রী জুপল্লি কৃষ্ণ রাও সোমবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, আটকে পড়া শ্রমিকদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেন, সুড়ঙ্গের ভেতরে অনেক উঁচু পর্যন্ত কাদার স্তর জমে রয়েছে। যার ফলে হাঁটাচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারীরা চলাচলের জন্য রাবার টিউব এবং কাঠের কাঠামো ব্যবহার করছেন। 

তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালে উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া নির্মাণ শ্রমিকদের উদ্ধারকাজে যে দল ছিল তারাও ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছেন উদ্ধার কাজে। এই ঘটনায় মোট ৯টি জাতীয় সংস্থা উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে।

তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি প্রতি মূহুর্তে পুরো ঘটনাটি তদারকি করছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ