সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এসময় পার্বত্য উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে কর্পোরেট ব্যাংকঋণের ব্যবস্থা করা হবে জানান তিনি। 

এছাড়া সাজেকে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ও হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়ে উপদেষ্টাদের সাথে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি। অগ্নি দুর্গত ৩৫ পরিবারকে ঘর নির্মাণের জন্য পরিবারপ্রতি দুই মে.

টন করে ৭০ মে.টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দেন পার্বত্য উপদেষ্টা।

পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন

বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সাজেক অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন শেষেতিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, “এ ক্ষতি অপূরণীয়, তবুও দায়িত্ব ও মানবিক দিক বিবেচনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো হবে।”

এর আগে স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিরা উপদেষ্টাকে তাদের ঘরগুলো নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নতিকরণ ও হোস্টেল নির্মাণ এবং সাজেকে হাসপাতাল বা ক্লিনিক নির্মাণের দাবি জানান। এছাড়া সাজেকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে যাতে বন বিভাগ থেকে বাধা দেওয়া না হয় সেজন্য উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কটেজ, রিসোর্ট, রেস্তোরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সাজেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন, পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার দাবি জানান।

পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন

পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ক্ষতিগ্রস্তদের দাবিগুলো শুনে জানান, দ্রুততম সময়ে সাজেকে বিশেষায়িত ফায়ার স্টেশন স্থাপনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ করা হবে। বলেন, কটেজ মালিকরা যাতে কর্পোরেট লোন পায় তার জন্য অর্থ উপদেষ্টাকে অনুরোধ করা হবে। অগ্নিদুর্গত স্থানীয় বাসিন্দদের গৃহ নির্মাণের জন্য প্রতি পরিবারকে দুই মেট্রিক টন খাদ্য শস্য বরাদ্দের ঘোষণা দেন। হাসপাতাল বা ক্লিনিক নির্মাণের জন্য আগামী কেবিনেট মিটিং এ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি কামনা করবেন এবং সাজেককে কিভাবে আরো সৌন্দর্যময় করে গড়ে তোলা যায় সে লক্ষে কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন এই উপদেষ্টা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনী ত্রিপুরা, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, জেলা পরিষদের সদস্য দেব প্রসাদ দেওয়ান, প্রতুল বিকাশ দেওয়ান, বৈশালী চাকমা, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী ও বিজিবির অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা ও পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সাজেক কটেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মণসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/শংকর/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য় দ র র উপদ ষ ট সহয গ ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩