কবির গ্রামের বাড়ি সংরক্ষণ ও জাদুঘর করবে সরকার
Published: 28th, February 2025 GMT
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী বলেছেন, পরিবারের সম্মতি পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদের বাড়িতে স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বাংলা সাহিত্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাড়ির স্মৃতি আগামী প্রজন্মের জন্য রাখা ও ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করবে।
কবি আল মাহমুদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কালের কলসের আয়োজনে ‘বিপ্লব বসন্তে আল মাহমুদ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন কালজয়ী কবি আল মাহমুদ।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, চার দশক ধরে আল মাহমুদকে কথিত মেইন স্ট্রিম সাহিত্যে উঠতে না দেওয়ার পেছনে ছিল রাজনীতি। কিন্তু আল মাহমুদ কোনো রাজনৈতিক দলের নন, পুরো বাংলা ভাষার।
কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আল মাহমুদের সৃষ্টি দৃষ্টান্তমূলকভাবে হাজির হয়। তাঁর চিন্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। চব্বিশের বিপ্লব যেন বেহাত না হয়, এ জন্য সাংস্কৃতিক লড়াই অবধারিত।
সভাপতির বক্তব্যে কবি আবদুল হাই শিকদার অবিলম্বে কবি আল মাহমুদের কবর রাষ্ট্রীয়ভাবে সংস্কারের দাবি জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কালের কলস সম্পাদক লেখক আবিদ আজম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন একুশে পদক জয়ী আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক কবি শাহীন রেজা, কবি জাকির আবু জাফর, ড.
অনুষ্ঠানে আল মাহমুদের গান পরিবেশন করেন শিল্পী আমিরুল মোমেনিন মানিক ও জান্নাতুন নাঈম পিংকী। কবিতা আবৃত্তি করেন শিমুল পারভীন, কামরুল হাসান জুয়েল, মুক্তা বরমন, ফারাহ দোলন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে; যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী