সাবেক মেয়র সূচনার ফ্ল্যাট ও ব্যাংক হিসাব জব্দ
Published: 3rd, March 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
দুর্নীতি মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনার ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া রাজধানীর উত্তরায় জমিসহ একটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো.
দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল করিম রেজা আবেদনটি করেন।
আবেদনে বলা হয়, সূচনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার বেশি জমা আছে এবং তার ফ্ল্যাটটি শহরের উত্তরা এলাকায় অবস্থিত।
আবেদনে আরও বলা হয়, কুমিল্লা-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে সূচনার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় থেকে ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। তার সঙ্গে জড়িত ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি ২২ লাখ ৫৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৯৩ টাকা সন্দেহজনক লেনদেনসহ অস্বাভাবিক আর্থিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
বিশ্বস্ত সূত্রে দুদক জানতে পেরেছে, সূচনা ওইসব অ্যাকাউন্ট থেকে ওই অর্থ অন্যত্র স্থানান্তরের চেষ্টা করছে। তাই তাকে এ কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য একটি আদেশ প্রয়োজন।
২০ জানুয়ারি বাহার, মেহেরুন্নেসা এবং তাহসিনের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক দুর্নীতির মামলা করে দুদক।
গত বছরের ১১ নভেম্বর একই আদালত এ কে এম বাহাউদ্দিন বাহার, তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা, মেয়ে তাহসীন বাহার সূচনা এবং ছেলে আইমন বাহারের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
তাহসীন বাহার সূচনা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নারী মেয়র ছিলেন। তার বাবা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সূচনা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
২০২৪ সালের ৯ মার্চ তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর ১৯ আগস্ট দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করায় তিনি পদচ্যুত হন। এরপর থেকে পলাতক রয়েছে সূচনা।
বিএইচ
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।