ভুল তথ্য দিলে ব্যাখ্যা তলব ছাড়াই জরিমানা
Published: 6th, March 2025 GMT
ঋণ তথ্য ব্যুরো (সিআইবি) হালনাগাদ পদ্ধতির জবাবদিহি বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তথ্য ‘আপলোড’-এ দেরি করলে কিংবা ভুল তথ্য দিলে ব্যাখ্যা তলব ছাড়াই জরিমানা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই জরিমানা আদায়ের আগে ব্যাংককে অবহিত করা হবে না। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের ঋণ শৃঙ্খলা সুসংহত করার লক্ষ্যে সিআইবি তথ্যভান্ডারে রক্ষিত ঋণতথ্যের গুণগত মান বজায় রাখা ও হালনাগাদ ঋণতথ্য সংরক্ষণ করা আবশ্যক। এ লক্ষ্যে সিআইবি রিপোর্টে ঋণগ্রহীতার মাসিকভিত্তিক তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে সিআইবি কার্যক্রম গতিশীল ও কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিদ্যমান নির্দেশনা অধিকতর কার্যকরী করতে ২০১১ সালে জারি করা সার্কুলারের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশোধিত নির্দেশনার আলোকে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এখন থেকে সিআইবিতে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে তথ্য আপলোড করতে হবে। আগে পরবর্তী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে তথ্য আপলোড করার বিধান ছিল। কোনো তথ্য একবার সিস্টেমে দেওয়ার পর সংশোধনীর দরকার হলে পরবর্তী সাত কর্মদিবস সময় পাবে ব্যাংক। এতদিন এ ক্ষেত্রে সময় ছিল তিন দিন। কোনো ব্যাংক এই নির্দেশনা মেনে তথ্য দিতে না পারলে কিংবা ভুল তথ্য দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে জরিমানার মুখে পড়বে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত তারিখের মধ্যে তথ্য হালনাগাদ করতে ব্যর্থ হলে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তিন দিনের মধ্যে জানাবে। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা ব্যুরোর কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নেবে ব্যাংক।
এতদিন জরিমানা করার আগে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাখ্যা তলব করা হতো। সেই ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে চিঠি দিয়ে জরিমানা পরিশোধের জন্য একটি তারিখ দেওয়া হতো। ওই তারিখের মধ্যে জরিমানার অর্থ জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নিত বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকালের সার্কুলারে বলা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে জরিমানা আদায়ের আগে নতুন করে কোনো ব্যাখ্যা তলব বা অবহিত করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের নিজ থেকে দেওয়া উত্তর সন্তোষজনক না হলেই বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিকলন করে আদায় করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স আইব
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।