রাজ মাসুদ ফরহাদের দুটি কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত
Published: 7th, March 2025 GMT
রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বুধবার (৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয় লন্ডন প্রবাসী তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কবি ও সম্পাদক রাজ মাসুদ ফরহাদের দুটি কাব্যগ্রন্থ ‘জলের ফুল’ ও ‘বিভাসিত রক্তগোলাপ’ এর প্রকাশনা উৎসব ও ইফতার মাহফিল।
কাব্যগ্রন্থ দুটি প্রকাশিত হয়েছে প্রতিকথা প্রকাশনা থেকে। শব্দ ও ভাবের আবেশে মোড়ানো এই প্রকাশনা উৎসবে উদ্বোধক ছিলেন কবি শাহীন রেজা। প্রধান অতিথি ছিলেন কবি রেজা উদ্দিন স্টালিন। প্রধান আলোচক ড.
বিশেষ আলোচক লেখক প্রবাল আহমেদ। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
আরো পড়ুন:
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
বইমেলায় ‘ভূতের উপহার’
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাব্যগ্রন্থ দুটির প্রকাশক হানিফ রাশেদীন।
কবি শাহীন রেজা বলেন, “কবি রাজ মাসুদ ফরহাদের ‘বিভাসিত রক্তগোলাপ’-এর কবিতাগুলো দুই-তিন লাইনের হলেও অনেক শক্তিশালী, গভীর ভাব ও বোধের উদ্রেক করে। মানুষ কিভাবে দেশের বাইরে থেকে দেশকে, মাটিকে ভালোবাসতে পারে রাজ তার উদাহরণ। তার ‘বিভাসিত রক্তগোলাপ’ কাব্যগ্রন্থে শব্দ নিয়ে খেলা করার বিশেষ আকুতি আছে।”
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. কাজল রশীদ শাহীন বলেন, “রাজ মাসুদ ফরহাদ তার কাব্যগ্রন্থদ্বয়ে কবিতার আঙ্গিকে গল্প বলেছেন। যে গল্প সময়ের কথা বলেছে। যে গল্পের ভেতরে অতীত কথা বলেছে। আবার কখনো কবিমনে ক্রোধ, আবেগ ও ভালোবাসার কথা বলেছে।”
তিনি আরো বলেন, “ফরহাদ তার প্রথম দুটি কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে কবিতা অঙ্গনে শক্তিশালী পদচারণার সূচনা করেছেন।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি রেজা উদ্দিন স্টালিন বলেন, “ফরহাদের এই দুটি বই প্রথম। তিনি বেশ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে বলে মনে হয়। পাঠককে আকৃষ্ট করার মতো রাজ মাসুদের একটা শক্তি আছে। দেশ-মাতৃকার টানে বারবার দেশের মাটির সংস্পর্শে আসার গুরুত্ব একজন কবির কবিতা জীবনে অনেক। আশা করি তিনি দেশের টানে, মা ও মাটির টানে সবসময় দেশে আসবেন।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, “দেশ থেকে দূরে থেকেও দেশের প্রতি যে আবেগ ভালোবাসা কবি মনে বিচরণ করে তারই ভাবধারা পুষ্ট হয়েছে এই দুটি কাব্যগ্রন্থে।”
রাজ মাসুদ ফরহাদ তার কাব্যগ্রন্থের আলোচনা করতে গিয়ে কবিতা প্রকাশের অনুভূতি ও প্রেরণা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। কোন কোন কবির অনুপ্রেরণায় তিনি কবিতা লিখতে উদ্বুদ্ধ হন এবং কী ধরনের কবিতা পড়তে ও রচনা করতে বেশি পছন্দ করেন। পাশাপাশি, কবিতার মাধ্যমে ব্যক্তিগত অনুভূতিকে শৈল্পিকভাবে প্রকাশের ধরন নিয়েও তিনি আলোকপাত করেন। কবি আশা প্রকাশ করেন, তার কবিতা বাংলা সাহিত্যে নতুন ভাষার সূচনা করবে এবং তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃতি করেন, রেজওয়ানুল কবির সুমন, ফারজানা এ্যালি, কবি আবু নাসিব।
প্রকাশনা উৎসবে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি আবিদ আজম, কবি অনিরুদ্ধ দিলওয়ার, অভিনেতা জাহিদ, কবি মাহমুদ নোমান, বাংলাদেশ টুমরো ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিবা ওয়াজিহা মাহবুব, সেলিম আহমেদ, মাযহারুল ইসলাম, মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জ ম স দ ফরহ দ ফরহ দ র অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’