পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন রিফাত বিন সাজ্জাদ (২৩)। স্থানীয়রা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার মোবাইলে এক তরুণীকে বেঁধে রাখা ও নির্যাতনের ভিডিও দেখতে পায় পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অজ্ঞাতপরিচয় ওই তরুণীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি।

সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী।

তিনি জানান, শনিবার (৮ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার রাধানগর গ্রামের তাহিরুল ইসলামের ইজিবাইক চুরি করে পালানোর সময় ধরা পড়ে রিফাত বিন সাজ্জাদ। এসময় তার সহযোগী আরও ২ জন পালিয়ে যায়। তিনি বোদা উপজেলার মাঝগ্রাম এলাকার মো.

আকতার হোসেনের ছেলে।

পরে তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, পালিয়ে যাওয়া দুইজন হলো রাণীগঞ্জ এলাকার মো. ফরিদুল ইসলাম ও ঠাকুরগাঁওয়ের নামাজপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম।

গ্রামবাসীরা গণধোলাইয়ের পর সাজ্জাতকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তখনই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তিনি গত ১৩ জানুয়ারি রাধানগর কিসমত রেলস্টেশন এলাকায় এক নারীকে (২৭) ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল বলে স্বীকার করে। পুলিশ তার মোবাইলে হত্যাকাণ্ডের ছবি-ভিডিও উদ্ধার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর আটোয়ারীর কিসমত স্টেশনে নামিয়ে পাশের এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তরুণীর যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে হত্যা করে। পরে মরদেহ রেললাইনে ফেলে যায়। পরদিন কিসমত এলাকায় রেলাইনে ক্ষতবিক্ষত ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। তবে খবর পেয়ে ঠাকুরগাঁয়ের ভুল্লি এলাকার একটি পরিবার তাদের মেয়ে মনে করে মরদেহ গ্রহণ করে দাফন সম্পন্ন করেন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ওই নারী পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। আমরা তার পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আসামি স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, ধর্ষণের পর ওই নারী টাকা দাবি করে এবং তার মাকে নিয়ে গালিগালাজ করে, সেজন্য তরুণীকে হত্যা করেছেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সিমন্সের চোখে মিরাজের অসুস্থতা ‘মধুর সমস্যা’

গলের মেঘলা আকাশ আর টানা বৃষ্টির মাঝে বাংলাদেশ টেস্ট দলের প্রস্তুতি শুরু হলো রোববার। শুরুর দিনেই একটি দুশ্চিন্তা—অসুস্থতার কারণে অনুশীলনে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের চোখে এটি আবার ‘মধুর সমস্যা’।

বাংলাদেশ কোচের মতে, মিরাজের সমস্যা সুযোগ করে দেবে অন্য কারও। তবে মিরাজও যে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সেটিও জানিয়েছেন সিমন্স। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন মিরাজের সর্বশেষ অবস্থা, ‘গত দুই দিনে সে অনেকটাই ভালো আছে। আমরা দেখব সন্ধ্যায় ওষুধের পর সে কেমন থাকে। আশা করি, কাল অনুশীলন করতে পারবে এবং খেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’

সিমন্স যোগ করেছেন, ‘এটা (মিরাজের অসুস্থতা) নিশ্চয়ই চিন্তার। তবে একজনের সমস্যা অন্যজনের জন্য সুযোগ এনে দেয়। দলের সবাই চায় মিরাজ সুস্থ হয়ে উঠুক, কিন্তু তারা এ–ও জানে, যদি মিরাজ না-ও খেলতে পারে, তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটা সমস্যা, তবে সমস্যাটা মধুর।’

মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবেমেহেদী হাসান মিরাজ

এদিন অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও কথা বলেন সিমন্স। ২০১৩ সালে গলে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকের কাছে বড় কিছু প্রত্যাশা করছেন না কোচ। তাহলে কী চাওয়া সিমন্সের? বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘আমি চাই সে যেন খেলাটা উপভোগ করে। ওই ইনিংস যেমন সে আনন্দ নিয়ে খেলেছিল, এবারও যেন সেটাই করে, তা-ই চাই। মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবে।’

সম্প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কত্বে হঠাৎ পরিবর্তন এনে নাজমুল হোসেনের বদলে মিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। সিমন্স মনে করেন, টেস্টে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নাজমুলের ওপর পড়বে না, ‘আমি একেবারেই মনে করি না যে এটি ওকে প্রভাবিত করবে। মাঠে নামলে নাজমুল শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, বাইরের বিষয় আমরা দেখি। তাই এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।’

বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ