অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবির।

আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন খান এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

সম্প্রতি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে ‘উগ্রবাদী মবস্টারদের’ উত্থানের জন্য দায়ী করেন। উপদেষ্টার এ মন্তব্যকে ভিত্তিহীন, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে এ প্রতিবাদ জানান তারা।

আরো পড়ুন:

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার দাবি ঢাবি সাদা দলের

বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক ছাত্র সংগঠন, যা সবসময় নৈতিকতা, জ্ঞান ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ঢাবি ছাত্রশিবির পরিকল্পনা, রাজপথের আন্দোলন ব্যবস্থাপনাসহ সব বিষয়ে সংযুক্ত থাকার প্রমাণ দুনিয়াব্যাপী সমাদৃত। ঢাবি ছাত্রশিবির গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি সাংগঠনিক পরিসরে শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রশিবির তার জনশক্তি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগে উৎসাহিত করেছে। 

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, মাহফুজ আলমের মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে দায় চাপানো ও বিভাজনের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির পুনরুত্থান চায় না ছাত্র সমাজ। রাষ্ট্র সংস্কারের এ মোক্ষম সময়ে সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে একটা নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠনকে টার্গেট করে এমন উদ্ভট, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিভাজনকে বৃদ্ধি করবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মাহফুজ আলমের এ ধরনের বক্তব্য ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকারের পারস্পরিক সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধ কমাবে এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার সময় তার নেওয়া শপথের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মাহফুজ আলম যেভাবে ঢাবি ছাত্রশিবিরকে টার্গেট করে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি তার অদূরদর্শী রাজনৈতিক বোঝাপড়া ও ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আমরা আশা করব, তিনি তার এ ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন। আমরা চাই হাসিনা পরবর্তী ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে রাগ, ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি আর ফিরে না আসুক।

বিবৃতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মাহফুজ আলমের কাছ থেকে আরো দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছে বলেও জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রশিবির।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র স গঠন সরক র র উপদ ষ ট র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে। 

গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।  

পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা। 
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়। 
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।  
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। 
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একটি টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তদের দুটি উচ্চতর গ্রেড পেতে আইনি বাধা কাটল
  • আট অঞ্চলে বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত
  • বাবার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
  • নতুন পোপ নির্বাচনের সমাবেশ শুরু ৭ মে
  • আগামী নির্বাচনে ইসি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে চায়: সিইসি
  • ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
  • ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
  • ‘বেগম’ রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ধারণ করেছে
  • পরবর্তী পোপ নির্বাচন কীভাবে