উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ শিবিরের
Published: 11th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবির।
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন খান এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
সম্প্রতি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে ‘উগ্রবাদী মবস্টারদের’ উত্থানের জন্য দায়ী করেন। উপদেষ্টার এ মন্তব্যকে ভিত্তিহীন, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে এ প্রতিবাদ জানান তারা।
আরো পড়ুন:
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার দাবি ঢাবি সাদা দলের
বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক ছাত্র সংগঠন, যা সবসময় নৈতিকতা, জ্ঞান ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ঢাবি ছাত্রশিবির পরিকল্পনা, রাজপথের আন্দোলন ব্যবস্থাপনাসহ সব বিষয়ে সংযুক্ত থাকার প্রমাণ দুনিয়াব্যাপী সমাদৃত। ঢাবি ছাত্রশিবির গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি সাংগঠনিক পরিসরে শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রশিবির তার জনশক্তি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগে উৎসাহিত করেছে।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, মাহফুজ আলমের মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে দায় চাপানো ও বিভাজনের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির পুনরুত্থান চায় না ছাত্র সমাজ। রাষ্ট্র সংস্কারের এ মোক্ষম সময়ে সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে একটা নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠনকে টার্গেট করে এমন উদ্ভট, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিভাজনকে বৃদ্ধি করবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মাহফুজ আলমের এ ধরনের বক্তব্য ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকারের পারস্পরিক সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধ কমাবে এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার সময় তার নেওয়া শপথের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মাহফুজ আলম যেভাবে ঢাবি ছাত্রশিবিরকে টার্গেট করে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি তার অদূরদর্শী রাজনৈতিক বোঝাপড়া ও ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আমরা আশা করব, তিনি তার এ ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন। আমরা চাই হাসিনা পরবর্তী ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে রাগ, ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি আর ফিরে না আসুক।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মাহফুজ আলমের কাছ থেকে আরো দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছে বলেও জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রশিবির।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র স গঠন সরক র র উপদ ষ ট র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।