মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ফুলকচি গ্রামে যেন খালের মাটি লুটের মচ্ছব চলছে। দীর্ঘদিন ধরে খাল থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে কিছু লোক। ইদানীং এ মাটি লুট অনেক বেড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফুলকচি গ্রামের হরিপদ বাড়ৈর ছেলে সাধন বাড়ৈ ও কালিপদ বাড়ৈর ছেলে সজিব বাড়ৈ খালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মাটি কেটে নিচ্ছেন। এক মাস আগে তারা প্রথম মাটি কাটা শুরু করেন। তাদের দেখে এলাকার আরও কিছু ব্যক্তি খাল থেকে মাটি কাটতে শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ফুলকচি গ্রামের এ খাল লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সংযোগকারী তালতলা গৌরগঞ্জ খাল থেকে উৎপন্ন হয়ে লৌহজংয়ের ফুলকচি, বাসুদিয়া, মিঠুসার, মালনী, বাগবাড়ি গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। খালটি দিয়ে এক সময় বড় বড় নৌকা যাতায়াত করত। ৫ বছর আগেও খালটি খনন করা হয়। এখন ওই খাল থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন লোক। এতে খালের পাশের জমিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ফুলকচি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে খাল থেকে শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটছেন সাধন বাড়ৈ ও সজীব বাড়ৈ। প্রায় ১০ ফুট গভীর করে ওই খালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মাটি শ্রমিক দিয়ে প্রায় এক মাস ধরে কাটছেন তারা। রংপুর জেলার বেশ কিছু শ্রমিককে মাটি কাটতে দেখা যায় ওই স্থানে। শ্রমিকরা বলেন, সাধন বাড়ৈ তাদের দিয়ে মাটি কাটাচ্ছেন। দৈনিক ৫০০ টাকায় মাটি কাটেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমাছ আলী বলেন, দু’জনের দেখাদেখি এখন অনেকেই মাটি কেটে নিচ্ছে। অনুমতি ছাড়া খালের মাটি কাটার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে সাধন বাড়ৈই বলেন, খালটি অনেক পুরোনো। ৪-৫ বছর আগেও সরকারিভাবে খালটি খনন করা হয়। তবে যে স্থান থেকে তারা মাটি কাটছেন সেই জমিটি তাদের বলে দাবি করেন তিনি। সরকার যদি খাল খনন করে তবে সেই স্থান তাদের জমি হলো কিভাবে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কায়েসুর রহমান জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সজীব বাড়ৈর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ইমরান জানান, খালের মাটি কেটে নেওয়ার কথা শুনেছেন। ঘটনাস্থলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তহশিলদারকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস