ইসলাম নিয়ে কটূক্তি প্রতিবাদে পাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
Published: 15th, March 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম ধর্মকে নিয়ে অশ্লীল ও উসকানিমূলক মন্তব্য করার দুই শিক্ষার্থীর শাস্তি দাবিতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী বিকর্ন দাস দিব্য এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী প্রণয় কুন্দু।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টায় এ বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে প্রশাসনিক ভবন, স্বাধীনতা চত্বর, প্রধান ফটক হয়ে শহীদ মিনারের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
আরো পড়ুন:
বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল নিয়ে কটূক্তি, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ৩ মামলা
এ সময় তারা ‘উগ্রবাদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘ইসলামের শত্রুরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘উগ্রবাদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ইসকনের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ শেষে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি ফেসবুকে ইসলাম ধর্মকে নিয়ে অগ্রহণযোগ্য, অশ্লীল কথাবার্তা বলায় বিকর্ন দাস দিব্য ও প্রণয় কুন্দুকে শাস্তির আওতায় আনা অতীব জরুরি। এ ধরনের ধর্মীয় উসকানিদাতা ও অশ্লীল কটূক্তিকারীর স্থায়ী বহিষ্কারের জোর দাবি জানাচ্ছি। ফেসবুকে এ ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য আমাদের ব্যথিত করে এবং আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপদ মনে করি না।
তারা আরো বলেন, বিকর্ণ দাস দিব্য ও প্রণয় কুন্দু পাবিপ্রবির ইতিহাসে একজন কুলাঙ্গার, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এ দেশে মুসলিম-হিন্দু-খ্রিষ্টান ভাই ভাই হিসেবে বসবাস করছে, ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু তারা পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টির পায়তারা করছে। এ পাবিপ্রবিতে যেকোনো ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করলে আমরা ছাড় দেব না।
ঢাকা/আতিক/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম প ব প রব ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।