নোমানী হত্যা মামলা: পাবিপ্রবির সহকারী অধ্যাপককে বহিষ্কার
Published: 15th, March 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যা মামলার আসামি আওয়াল কবির জয়কে সাময়িক বহিষ্কার করেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) প্রশাসন। জয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে বহিষ্কারের বিষয়টি জানা গেছে। গত বুধবার (১২ মার্চ) রেজিস্ট্রার অফিস আওয়াল কবির জয়ের বহিষ্কার নিয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.
তার এসব আচরণ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ)(গ) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর থেকে আওয়াল কবির জয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি তৎকালীন প্রশাসনের কাছে অনুমতি নিয়ে তিন মাসের জন্য অনলাইনে ক্লাস নেন। নতুন প্রশাসন আসার পর অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি চাইলে, তা মঞ্জুর করা হয়নি। গত ৭ নভেম্বর থেকে তিনি লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। তাকে কর্মস্থলে আসার জন্য প্রশাসন থেকে আদেশ দেওয়া হলেও তিনি তা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে আমরা সাময়িক খুশি হয়েছি। তবে আমরা এ খুনির স্থায়ী বহিষ্কার চাই। একজন খুনির জায়গা কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে পারে না। সামনে যেন এই খুনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ না করতে পারে, প্রশাসন যেন সে উদ্যোগ নেয়।”
আওয়াল কবির জয় ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ২০০৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যা মামলার তিন নাম্বার আসামি ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সালে তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
ঢাকা/আতিক/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।