নারী নির্যাতনের সংশোধিত আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিয়ে নারীপক্ষের উদ্বেগ
Published: 16th, March 2025 GMT
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সংশোধন এনে দ্রুত বিচার ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেসরকারি সংগঠন নারীপক্ষ। তারা মনে করে, জনতুষ্টির জন্য তড়িঘড়ি আইন সংশোধন অবিবেচনাপ্রসূত; যা অপরাধের সুবিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।
আজ রোববার নারীপক্ষের আন্দোলন সম্পাদক সাফিয়া আজীমের সই করা বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নারী ও শিশুর ওপর ধর্ষণ এবং যৌন আক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০”–এর অধিকতর সংশোধন করতে দ্রুত বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে একটি অধ্যাদেশ জারি করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগ আমাদেরকে উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত করছে। সমস্যার মূলে না গিয়ে কেবল জনতুষ্টি আদায়ের জন্য তড়িঘড়ি আইন সংশোধন অবিবেচনাপ্রসূত, যা নারী ও শিশু নির্যাতন এবং তাদের ওপর ধর্ষণ ও যৌন আক্রমণ বন্ধে কোনো সমাধান আনবে না। বরং অপরাধের সুবিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইতিমধ্যে আইন উপদেষ্টাকে এ বিষয়ে নারীপক্ষের অবস্থান ও বক্তব্য স্পষ্ট করে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন বলে নারীপক্ষ প্রত্যাশা করে।
ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে অর্ধেক করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে বলে গত বুধবার জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
এর আগে গত রোববার আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ধর্ষণের মামলায় তদন্তের সময় ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হচ্ছে। আর বিচার শেষ করতে হবে ৯০ দিনের মধ্যে। এ ছাড়া উপযুক্ত ক্ষেত্রে বিচারক যদি মনে করেন, তবে ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়াই চিকিৎসা সনদের ভিত্তিতে এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষীর ভিত্তিতে মামলার বিচারকাজ চালাতে পারবেন। এমন বিধান রেখে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনধর্ষণ মামলার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে করতে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি, জানালেন আইন উপদেষ্টা১২ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ন আইন
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক