মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৫ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। ক্রিকেট খেলোয়াড় সেজে তাঁরা দেশটিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার তাঁদের আটক করে মালয়েশিয়ার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা সংস্থা (একেপিএস)।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে একেপিএস জানিয়েছে, ওই ব্যক্তিরা ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ইউনিফর্ম পরে ছিলেন। একটি টুর্নামেন্টের আয়োজক সংস্থার চিঠি দেখিয়ে তাঁরা একেপিএসের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তদন্ত করে দেখা যায়, টুর্নামেন্টের আয়োজক সংস্থার ওই চিঠিটি ছিল ভুয়া।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাটির বিবৃতি অনুযায়ী, চিঠিতে বলা হয়েছে, ২১ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ক্রিকেট টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই সময়ে ক্রিকেটের কোনো আয়োজনের তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ওই বাংলাদেশিরা একজনকে ‘স্পনসর’ হিসেবে দেখিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেছেন, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

একেপিএস বলেছে, তদন্ত করে ওই বাংলাদেশিরা যে ক্রিকেট খেলোয়াড়—সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা কোনো চক্রের অংশ এবং অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ক্রিকেটারের বেশ নিয়েছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিবাসী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা

সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।

বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।

বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।

বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’

বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ