আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী বাংলাদেশি শিক্ষক রাইসুল
Published: 22nd, March 2025 GMT
বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রাইসুল সৌরভ আয়ারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব গলওয়ে স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ২০২৫-২৬ মেয়াদের জন্য জাতিগত সংখ্যালঘু কর্মকর্তা পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ইউনিভার্সিটি অব গলওয়ে ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে ছাত্র ইউনিয়নের যাত্রা শুরু ১৯১১ সালে। পরবর্তী সময়ে সেটি ১৯৬৪ সালে সাংবিধানিকভাবে বর্তমান ইউনিয়নের রূপ লাভ করে। আয়ারল্যান্ডের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মাইকেল ডি হিগিন্স ১৯৬৪-৬৫ সালে তৎকালীন ছাত্র সংসদের প্রথম সভাপতি ছিলেন।
১৩ মার্চ দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন সিস্টেমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সময় রাত ৯টায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। রাইসুল সৌরভ ১ হাজার ২৯৮ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এ পদে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হলেন। এর আগে ২০২৪-২৫ মেয়াদেও রাইসুল সৌরভ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ৩০ জুন চলতি দায়িত্ব শেষে আগামী ১ জুলাই থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাইসুল সৌরভ গলওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল স্কুলে পিএইচডি প্রোগ্রামে কলেজ অব বিজনেস, পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ল কর্তৃক বৃত্তির অধীন লিগ্যাল অ্যানালিটিকস বিষয়ে গবেষণা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা ও গবেষণা করছেন, যেখানে ছাত্র ইউনিয়ন সব শিক্ষার্থীর স্বার্থ সুরক্ষা ও কল্যাণের জন্য কাজ করে। নির্বাচিত হয়ে রাইসুল সৌরভ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতিগত সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। তিনি তাঁর মেয়াদে আইরিশ সমাজের সব স্তরে জাতিগত সংখ্যালঘু ছাত্রদের অধিকারের প্রচার, রক্ষা ও সমর্থনে কাজ করে যেতে চান।
আরও পড়ুনবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত বিষয়ের বাইরের বিষয় পড়াশোনার সুযোগ বন্ধের উদ্যোগ২০ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন য ন
এছাড়াও পড়ুন:
কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য: মাহমুদুর রহমান মান্না
‘এরা সংস্কারের কথা বলে, কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। অর্থনীতিতে নেই, পুলিশের কোনো সংস্কার হচ্ছে না, শিক্ষায় নেই, কোথাও নেই। তাহলে এই সংস্কারটা কী?’ এ প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলে মান্না বলেছেন, ‘টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু তার কোনো মূল্য নেই। পুলিশ বা প্রশাসনে কী সংস্কার হচ্ছে, সেটাও জানানো হচ্ছে না। কোনো কমিটি পর্যন্ত নেই। তাই প্রশ্ন জাগে, এই কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য?’
আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন মান্না। ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
আলোচনায় বাজেট নিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বৈষম্য নিরসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। বাজেট না হয়ে এটা রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে এমন কোনো কথা হয়েছে কি না, যেটা বাইরে বলা যাবে না, সেই প্রশ্ন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি। এরপরও নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মান্না।
নির্বাচন ছাড়া যাওয়ার কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি হঠাৎ কিছু ঘটিয়ে দেয়, সেটা বলা যায় না। কিন্তু আমরা তো জানি, সেই ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নাই। সেই অর্থে মাইনাস নির্বাচন-এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। নির্বাচন ইস্যুতে বরফ জমে ছিল, এখন সেটি গলতে শুরু করেছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ওই তারিখে নির্বাচন হতে পারবে না। সরকার বলেছিল একমাত্র ওই দল বিরোধিতা করছে। এখন যেভাবে কথা হচ্ছে, মনে হচ্ছে বরফ গলছে। আমি এটা ইতিবাচক মনে করি। আমি গণতন্ত্র চাই, সেই জন্যই নির্বাচনের ওপর এত জোর দিচ্ছি।’
পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ঘাটতি দেখছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর যেখানেই যাই কেউ তো আমাদের ফেরত দিচ্ছে না। সবাই আমাদের ডাকছে আসো, তোমাদের কী লাগে সংস্কারের জন্য, কী করতে হবে, দেশটা বদলাবার জন্য কী করতে হবে, একদম সর্বোচ্চ জায়গা থেকে বলা হয়েছে। অথচ দেখলেন এই পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনবার জন্য ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী (যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার) কী আচরণ করলেন। উনি ঠিক করেছেন নাকি আমরা কোনো কথাবার্তা না বলে গেছি?’
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সেখানে লিখিত বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাসার হাওলাদার প্রমুখ।