নিজেদের ক্লাবে শেষ কয়েক সপ্তাহে উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন ব্রুনো ফের্নান্দেজ ও ভিতিনহা। অথচ পর্তুগালের জার্সিতে উয়েফা ন্যাশনস লিগের প্রথম লেগে ডেনমার্কের বিপক্ষে একদম নিষ্প্রভ ছিলেন এই দুই তারকা মিডফিল্ডার। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা কারণ হিসেবে পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্তিনেজের অকার্যকরী কৌশলকেই দায়ী করেছিলেন।

অবস্থা যে জটিল সে ব্যাপারটা স্বীকার করলেন পর্তুগিজ অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। ৫ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী তারকার দাবি রবিবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে নামার আগে দলের অবস্থা নাজুক, তবে সবকিছু এখনও শেষ হয়ে যায়নি। জোসে আলভালাদে স্টেডিয়ামে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে আজ রাতে নামছে রোনালদোরা।

আরো পড়ুন:

জার্মানি-ইতালি ম্যাচে ফিরে আসছে ২০০৬ বিশ্বকাপের স্মৃতি

মেসি-মার্তিনেজবিহীন আর্জেন্টিনা হারিয়ে দিল উরুগুয়েকে

ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে রোনালদো অবশ্য প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। চাপ থাকা সত্ত্বেও, এই মহাতারকা পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, দলের সবাই শান্ত আছে এবং সেমিফাইনালে পৌঁছানোর লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছে। রোনালদো বলেন, “আমরা কিছুটা উদ্বিগ্ন তবে ব্যাপারটা বাঁচামরার মতো নয়। আমরা জানি জিততে হবে। ফুটবলের সৌন্দর্যই হছে এই চ্যালেঞ্জটা। মাঠে আমরা আমাদের সেরা দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

ন্যাশনস লিগের চলমান আসরে গ্রুপ পর্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৫টি) রোনালদো। তিনি ঘরের মাঠে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। পর্তুগিজ অধিনায়ক মেনে নিয়েছেন যে, প্রথম লেগে ভালো খেলেনি তারা। তবে ভুলগুলো সংশোধন করতে এবং পরিস্থিতি বদলে ফেলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তিনি।

রোনালদো বলেন, “আমরা প্রথম লেগ হেরেছি। আগামীকাল (আজ) আমদের হাতে দ্বিতীয় লেগ আছে। খারাপ দিন থাকেবেই। আমি ভালো খেলিনি, দলও ভালো খেলেনি, এটাই ফুটবল। এখন নার্ভাস থাকার সময় না। একত্রিত থাকার এবং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ম্যাচ খেলার সময়। আমি সব সময় খেলার জন্য প্রস্তুত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পর্তুগালের জেতাটা। আমি মাঠে থাকি বা না থাকি। আমি জানি শারীরিক এবং মানসিকভাবে কিভাবে জেগে উঠতে হয়। আমি দলকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকব।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল পর ত গ ল পর ত গ

এছাড়াও পড়ুন:

এখনও পাহাড়ের নিচে বাস ২০ সহস্রাধিক মানুষের

২০১৭ সালের ১৩ জুনের ভয়াবহ পাহাড় ধসের দৃশ্য এখনও চোখে ভেসে উঠলে শিউরে উঠি। এখনও আমার ঘরের আশপাশে সেই পাহাড় ধসের চিহ্ন রয়ে গেছে। তাই অল্প বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকি, আশ্রয়কেন্দ্র খুঁজি। কিন্তু আমরা অসহায় ও গরিব, যেখানে পেটের ভাত জোগাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে নিরাপদ ভাড়া বাসায় থাকার সামর্থ্য কোথায়? তাই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই পাহাড়ের নিচে বসবাস করছি। 
কথাগুলো বলছিলেন রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর লোকনাথ মন্দিরের পাশে সিএনবির পাশে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা পঞ্চাশোর্ধ্ব নূরজাহান। শুধু নূরজাহান নন, রূপনগর, মুসলিমপাড়া, শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দির এলাকা, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন নিচু এলাকা, কিনারাম পাড়াসহ শহরের অন্তত ২৯টি স্থানে ২০ হাজারের বেশি নিম্ন আয়ের মানুষ মারাত্মক ঝুঁকি জেনেও বসবাস করছে পাহাড়ের পাদদেশে। একটু ভারী বৃষ্টি এলেই সবার স্মৃতিতে ফিরে আসে, ২০১৭ সালের এ দিনে শহরে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। কিন্তু পুনর্বাসন না হওয়ায় পাহাড়ের নিচে বসবাস বন্ধ হয় না। উল্টো দিন দিন বাড়ে। 

এমন অবস্থায় আজ শুক্রবার ২০১৭ সালেই সেই ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনার আট বছর পূর্ণ হলো। ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা, মুসলিমপাড়া, শিমুলতলী, রূপনগর, সাপছড়ি, মগবান, বালুখালী, জুরাছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যু হয়। মানিকছড়িতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ওপর থেকে মাটি সরাতে গিয়ে ৫ সেনা সদস্য পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়েন। ওই সময় পাহাড় ধসে জেলায় ১৬০০ থেকে ১৭০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সারাদেশের সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল এক সপ্তাহ। দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পর ক্ষতিগ্রস্তরা নিজেদের জায়গায় ফিরে যায়। এ ছাড়া ২০১৮ সালে নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে দুই শিশুসহ ১১ জন এবং ২০১৯ সালের কাপ্তাইয়ে ৩ জনের প্রাণহানি ঘটে।
২০১৭ সালের সেই পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল ও বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পরও ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের পুনর্বাসন করতে পারেনি প্রশাসন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করেই দায় সারে তারা। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থাপনা নির্মাণ না করতে মাঝেমধ্যে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়। কিন্তু এই সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান আজও হয়নি। 
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রাঙামাটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে শিমুলতলী, রূপনগর, লোকমন্দির পাড়া, পোস্ট অফিস কলোনি এলাকা, নতুনপাড়া, বিদ্যানগর, কিনারামপাড়া, সিলেটি পাড়াসহ অন্তত ২৯টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া নানিয়ারচর, কাউখালীসহ কয়েকটি উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে। এসব এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে এখনও ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রূপনগর, লোকনাথ মন্দির, মুসলিমপাড়া এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, ২০১৭ সালের ওই পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নতুন বসতি গড়ে উঠেছে। কথা হয় রূপনগর এলাকার বাসিন্দা সমলা আক্তার, কমলা বেগম, আব্দুল মান্নান ও শাহানা বেগমের সঙ্গে। তারা জানান, ভারী বৃষ্টি হলেই ভয় লাগে। কিন্তু তাদের যাওয়ার কোথাও জায়গা নেই। বেশি বৃষ্টি হলে জেলা প্রশাসন থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু সম্পদ হারানোর ভয়ে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে চায় না। 
তারা আরও জানান, সবাই চায় ভালো ও নিরাপদ স্থানে বসবাস করতে। তাই সরকার যদি তাদের পুনর্বাসন করে তাদের জন্য ভালো হয়।  
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের পুনর্বাসন চলমান প্রক্রিয়া। তবে এ ক্ষেত্রে জটিলতা হচ্ছে, যেখান থেকে মানুষজনদের সরিয়ে নেওয়া হয়, সেখানে আবারও নতুন লোকজন বসবাস শুরু করে। এসব এলাকায় লোকজন কম টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। তা ছাড়া পাহাড়ে ভূমি জটিলতা থাকার কারণে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বা পাহাড়ের ঢালুতে মানুষ বসবাস করছে। যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থাও। তবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস বন্ধ করতে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের পাল্টা আঘাতে কাঁপল ইসরায়েল
  • জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া
  • আলীকদমে ২ পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ‘ট্যুর এক্সপার্টের’ বর্ষা গ্রেপ্তার
  • ইরানে এখনও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল: আইডিএফ
  • স্বপ্নে হলো দেখা
  • শতবর্ষী বিষাদ
  • এখনও পাহাড়ের নিচে বাস ২০ সহস্রাধিক মানুষের
  • অন্তর্বর্তী সরকারের সব উদ্যোগে এবি পার্টির সমর্থন রয়েছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
  • কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রয়ে গেছে আন্তঃবৈষম্য: উপদেষ্টা ফরিদা
  • এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে যা জানা গেল