‘আমাদের হাতে এখনও দ্বিতীয় লেগ আছে’
Published: 23rd, March 2025 GMT
নিজেদের ক্লাবে শেষ কয়েক সপ্তাহে উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন ব্রুনো ফের্নান্দেজ ও ভিতিনহা। অথচ পর্তুগালের জার্সিতে উয়েফা ন্যাশনস লিগের প্রথম লেগে ডেনমার্কের বিপক্ষে একদম নিষ্প্রভ ছিলেন এই দুই তারকা মিডফিল্ডার। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা কারণ হিসেবে পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্তিনেজের অকার্যকরী কৌশলকেই দায়ী করেছিলেন।
অবস্থা যে জটিল সে ব্যাপারটা স্বীকার করলেন পর্তুগিজ অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। ৫ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী তারকার দাবি রবিবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে নামার আগে দলের অবস্থা নাজুক, তবে সবকিছু এখনও শেষ হয়ে যায়নি। জোসে আলভালাদে স্টেডিয়ামে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে আজ রাতে নামছে রোনালদোরা।
আরো পড়ুন:
জার্মানি-ইতালি ম্যাচে ফিরে আসছে ২০০৬ বিশ্বকাপের স্মৃতি
মেসি-মার্তিনেজবিহীন আর্জেন্টিনা হারিয়ে দিল উরুগুয়েকে
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে রোনালদো অবশ্য প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। চাপ থাকা সত্ত্বেও, এই মহাতারকা পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, দলের সবাই শান্ত আছে এবং সেমিফাইনালে পৌঁছানোর লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছে। রোনালদো বলেন, “আমরা কিছুটা উদ্বিগ্ন তবে ব্যাপারটা বাঁচামরার মতো নয়। আমরা জানি জিততে হবে। ফুটবলের সৌন্দর্যই হছে এই চ্যালেঞ্জটা। মাঠে আমরা আমাদের সেরা দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
ন্যাশনস লিগের চলমান আসরে গ্রুপ পর্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৫টি) রোনালদো। তিনি ঘরের মাঠে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। পর্তুগিজ অধিনায়ক মেনে নিয়েছেন যে, প্রথম লেগে ভালো খেলেনি তারা। তবে ভুলগুলো সংশোধন করতে এবং পরিস্থিতি বদলে ফেলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তিনি।
রোনালদো বলেন, “আমরা প্রথম লেগ হেরেছি। আগামীকাল (আজ) আমদের হাতে দ্বিতীয় লেগ আছে। খারাপ দিন থাকেবেই। আমি ভালো খেলিনি, দলও ভালো খেলেনি, এটাই ফুটবল। এখন নার্ভাস থাকার সময় না। একত্রিত থাকার এবং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ম্যাচ খেলার সময়। আমি সব সময় খেলার জন্য প্রস্তুত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পর্তুগালের জেতাটা। আমি মাঠে থাকি বা না থাকি। আমি জানি শারীরিক এবং মানসিকভাবে কিভাবে জেগে উঠতে হয়। আমি দলকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকব।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল পর ত গ ল পর ত গ
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা