যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে একটি পার্কে গোলাগুলির ঘটনায় কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং আরো ১৫ জন আহত হয়েছেন। খবর সিএনএনের।

পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নিউ মেক্সিকোর লাস ক্রুসেসের ইয়ং পার্কে একটি গাড়ি প্রদর্শনী চলাকালে দুই পক্ষের ঝগড়ার মধ্য দিয়ে গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটে এবং পরে তা গুলি বিনিময় পর্যন্ত গড়ায়। ঘটনাস্থলে ৫০-৬০টি গুলির খোসা পাওয়া গেছে।

গোলাগুলির সময় পার্কে প্রায় ২০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

দাম কমাতে তুরস্ক-দ.

কোরিয়া থেকে ডিম আমদানি করবে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র মার্কিন মালিকানায় নেওয়ার প্রস্তাব ট্রাম্পের

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে লাস ক্রুসেস পুলিশ প্রধান জেরেমি স্টোরি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ইয়ং পার্কটি সন্ত্রাসীদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়েছে।

স্টোরি বলেন, “পুলিশ বিভাগ অপরাধ কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন রাত ১১ টায় পার্কটি তালাবদ্ধ করা। কিন্তু আমরা এখনও এর সাথে লড়াই করছি।”

পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দুজনের বয়স ১৯ বছর এবং একজনের বয়স ১৬ বছর। অন্যদিকে আহতদের বয়স ১৬ থেকে ৩৬ বছরের মধ্যে।

লাস ক্রুসেসের মেয়র এরিক এনরিকেজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি আমাদের শহরের জন্য এক মর্মান্তিক ও ভয়াবহ ঘটনা। আমি এখানকার বাসিন্দাদের একত্রিত হতে, শক্তিশালী হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে এবং আমাদের শহরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হতে অনুরোধ জানাতে চাই।

নিউ মেক্সিকোর গভর্নর মিশেল লুজান গ্রিশাম বলেছেন, গুলিবর্ষণের এই ঘটনায় তিনি ব্যথিত ও আতঙ্কিত।

গভর্নর আরো বলেন, লাস ক্রুসেসে সহিংস অপরাধ গত বছরের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এফবিআই, নিউ মেক্সিকো স্টেট পুলিশসহ অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা লাস ক্রুসেস পুলিশকে তদন্তে সহায়তা করছে।

পুলিশ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি, তবে তদন্তকারীরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।

লাস ক্রুসেস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে প্রায় ৪১ মাইল উত্তরে চিহুয়াহুয়ান মরুভূমির প্রান্তে অবস্থিত।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে, বন্দুক হামলার এ ঘটনাটি ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৩তম গোলাগুলির ঘটনা।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ