শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বাবাকে হত্যার পর এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে যুবক তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এর কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তের মরদেহ উদ্ধার হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল হোসেন মোল্লা। তিনি উপজেলার চেরাগআলী বেপারী কান্দি এলাকার বাসিন্দা। মারা যাওয়া যুবকের নাম রুবেল মোল্লা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চেরাগআলী বেপারী কান্দি এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন মোল্লার প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম ২৯ বছর আগে তিন সন্তান রেখে মারা যান। এরপর মকবুল বিয়ে করেন সেলিনা বেগমকে। সেই ঘরে জন্ম নেয় চার সন্তান। মকবুল আগের ঘরের একমাত্র ছেলে সন্তান রুবেল মোল্লা বড় হওয়ার পর তাকে সাবলম্বী করতে পাঠিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়।
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে শ্রমিক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
১৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে দেড় বছর আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। এরপর দুই স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য, মকবুল বাড়ির পাশেই রুবেল মোল্লার জন্য তৈরি করে দেন আলাদা বাড়ি। এছাড়াও বিয়ের জন্য দেখা শুরু করেন পাত্রী।
বছর খানেক আগে নতুন বাড়ির আঙ্গিনায় কিছু আম ও পেয়ারা ফলের গাছ লাগিয়ে দেন মকবুল। গতকাল রবিবার (২৩ মার্চ) কোনো কারণ ছাড়াই গাছগুলো কেটে ফেলেন ছেলে। বিষয়টি নিয়ে সন্ধ্যায় মকবুল ও তার ছেলে রুবেল মোল্লার কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রুবেল মোল্লা কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন বাবা মকবুলকে। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মকবুলকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক মকবুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনার পর রুবেল মোল্লাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় মাঠের মধ্যে। পুলিশের ধারণা, ঘটনা ঘটিয়ে পালানোর সময় মাটিতে পড়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান রুবেল মোল্লা। পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, “চিৎকার চেচামেচির খবর পেয়ে দৌঁড়ে এসে দেখি মকবুল মাটিতে পড়ে আছেন। তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন, তিনি মারা গেছেন। তার ছেলে রুবেল মোল্লাকে একটি মাঠের পাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।”
মকবুলের ভাই আনোয়ার মোল্লা বলেন, “রুবেলের মা মারা যাওয়ার পর আমার ভাই মকবুল আরেকটি বিয়ে করেন। সৎ মা ও বাবা দুইজনই সন্তানকে ভালোবাসতেন। ছেলের সঙ্গে বাবার মধুর সম্পর্ক ছিল। ছেলে বাবাকে হত্যা করবে এমনটি কখনো কল্পনা করতে পারিনি আমরা।”
নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, “মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য অভ য গ র জন য মকব ল
এছাড়াও পড়ুন:
মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা
সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এক কৃষকের মরিচখেতে একটি তাজা গ্রেনেড পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান তাঁর মরিচখেতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় ওই গ্রেনেড পান। বিষয়টি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপর বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশকে জানানো হয়।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মখলিছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেনেড সাদৃশ্য ওই বস্তু দেখতে পায়। এরপর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় থাকা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ঘটনাটি জানানো হয়। আজ দুপুরে সেখান থেকে লেফটেন্যান্ট আল হোসাইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে প্রথমে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেন তাঁরা। নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রেনেডটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। চারপাশের মাটি গর্ত হয়ে যায়।
সেনা কর্মকর্তা আল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেনেডটি বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে। এটি মাটির নিচে ১০০ বছরের কমবেশি সময়ে সক্রিয় থাকে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উচিত ছিল আগেই বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো। এটি বিস্ফোরিত হলে জানমালের অনেক ক্ষতি হতে পারত।