তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কামরাঙ্গীচালা এলাকায় একটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এ সময়ে শ্রমিকেরা সকাল সাড়ে সাতটা থেকে এক ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।

উপজেলার কামরাঙ্গীচালা এলাকায় ‘হ্যাগ নীট ওয়্যার’ নামের কারখানার অবস্থান। এতে তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রমিকেরা কয়েক দিন ধরে বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছে না। আজ সকাল ৭টার দিকে শ্রমিকেরা কাজে গিয়ে দেখেন, কারখানার ফটকে তালা ঝুলছে। কারখানা বন্ধ দেখতে পেয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন।

একপযায়ে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেন। সকাল সাড়ে আটটা থেকে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় সকাল নয়টার দিকে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে অবস্থান করছিলেন।

আরও পড়ুনগাজীপুরে ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ভোগান্তি১৬ ঘণ্টা আগে

কারখানার জুনিয়র অপারেটর স্বপ্না বেগম বলেন, ‘চলতি মাসসহ তিন মাস ধরে আমাগো বেতন দেয় না। আশপাশের সব কারখানায় ঈদের বোনাস দিয়া দিছে কিন্তু আমাগে দেয় নাই। গতকাল (সোমবার) বেতন ও ঈদের বোনাস চাইছি। আজ (মঙ্গলবার) সকালে কাজে আইসা দেহি গেটের মধ্যে তালা দিয়া রাখছে। ভিতরেও কেউ নাই।’

কালিয়াকৈর থানার মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুস সেলিম বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে মহাসড়ক থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে; তাদের এনে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র ব ন স

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ