পুকুরে জাল ফেলে তিন মেয়েশিশুর লাশ উদ্ধার
Published: 25th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের বাহারছড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে তিন মেয়েশিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে মাছ ধরার জাল ফেলে এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই শিশুরা গতকাল বিকেলে শাক তোলার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, শাক তোলার একপর্যায়ে পুকুরে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত শিশুরা হলো বাহারছড়া গ্রামের মনজুর আলমের মেয়ে মরিয়ম আক্তার (১০), ইউসুফ নবীর মেয়ে রিয়া মনি (৯) ও জাফর আলমের মেয়ে তসলিমা বেগম (৮)। ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মসিউর রহমান তিন শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন শিশু ঘরে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানে পুকুরে জাল ফেলা হয়। রাত আটটার দিকে জালে প্রথমে মরিয়মের লাশ উঠে আসে। এরপর জাল ফেলে রিয়া মনি ও তসলিমার লাশ পাওয়া যায়।
নিহত মরিয়মের বাবা মনজুর আলম বলেন, গতকাল বিকেল চারটার দিকে মরিয়ম, রিয়া মনি ও তসলিমা একসঙ্গে বাড়ির নিকটবর্তী হাঙর খালের পাশে একটি পুকুরে শাক তুলতে গিয়েছিল। সম্ভবত বেখেয়ালে শিশুরা পুকুরের পানিতে ডুবে গেছে। তাদের কেউ সাঁতার জানত না। ইটভাটার জন্য মাটি কাটার কারণে পুকুরটি সৃষ্টি হয়েছে। পুকুরে পানির গভীরতা অনেক বেশি ছিল।
জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর তাজ প্রথম আলোকে বলেন, পরিত্যক্ত পুকুরে শাক তুলতে গিয়ে তিনটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।