ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার এবং বিক্ষোভকারীদের আটকের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন রুবিও। তিনি বলেন, ‘আমরা তুরস্কের মতো ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশে এ ধরনের অস্থিতিশীলতা চাই না।’

গতকাল বৃহস্পতিবার তুরস্কের চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খেয়াল করছি। এরই মধ্যে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। কোনো দেশেই আমরা এ ধরনের অস্থিতিশীলতা চাই না। বিশেষ করে আমাদের ঘনিষ্ঠ কোনো মিত্র দেশে তো কোনোভাবেই নয়।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যরা যেসব প্রতিবেদন দেখছেন, আমরাও সেই একই খবর দেখছি। চলমান বিক্ষোভ এবং কিছু খবর নিয়ে আমরা নিশ্চিতভাবে উদ্বিগ্ন।’

গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে রুবিও ও ফিদান বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে রুবিও লেখেন, ‘তুরস্কে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারের ঘটনা ও বিক্ষোভ নিয়ে আমি উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’ কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুরস্কের এক কূটনীতিক বলেন, এভাবে কিছু বলা হয়নি।

তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। সেই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ওয়াশিংটন-আঙ্কারার মধ্যে মোটামুটি সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ায় বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে এরদোয়ান প্রশাসনের সম্পর্কের অবনতি হয়। এখন নতুন ট্রাম্প প্রশাসন আঙ্কারার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে।

১৯ মার্চ একরেম ইমামোগলুকে আটক করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানী আঙ্কারা, ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এখনো প্রতিদিন বিক্ষোভ হচ্ছে। একই সঙ্গে ধরপাকড়ও অব্যাহত রয়েছে।

মিছিলে নিজেদের মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে, ২৬ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত রস ক র ঘন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

নেতানিয়াহু অঞ্চলজুড়ে আগুন লাগাতে চাইছেন: ইরানের প্রেসিডেন্টকে এরদোয়ান

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আগুন লাগাতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু ইরানে হামলা চালিয়ে পারমাণবিক আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন। গতকাল শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে এক ফোনালাপে এরদোয়ান এ কথাগুলো বলেছেন।

এরদোয়ানের দপ্তরের দেওয়া এক বিবৃতি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান বলেছেন, গাজায় হওয়া জাতিগত হত্যার ঘটনা থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরাতে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

ইরানি প্রেসিডেন্ট ছাড়াও সৌদি আরব, পাকিস্তান, জর্ডান ও মিসরের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেছেন এরদোয়ান। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।

শনিবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলই এখন এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তুরস্ক সরকারের যোগাযোগবিষয়ক দপ্তরের বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

দপ্তরের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, এরদোয়ান মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। সিসিকে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েলের হামলা গভীরভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করেছে। আইনের তোয়াক্কা না করার যে মনোভাব নেতানিয়াহুর মধ্যে দেখা গেছে তা বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির।

এরদোয়ান আরও সতর্ক করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ