আশ্রয়দাতার শিশুসহ ৪ শিশুকে নিয়ে পালাচ্ছিলেন আদুরী, স্টেশনে ধরা
Published: 29th, March 2025 GMT
রংপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে অপহৃত চার শিশুসহ আদুরী বেগম (৩৫) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে স্টেশন এলাকা থেকে ওই নারীকে আটকের বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রংপুর নগরীর তপোধন গ্রাম থেকে চার শিশু নিয়ে ওই নারী ইফতার পরবর্তী সময়ে উধাও হন। এরপর বিষয়টি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে জানালে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় পুলিশ। এর পরেই স্টেশন এলাকা থেকে অপহৃত চার শিশুসহ ওই নারীকে রেলওয়ে পুলিশ আটক করে।
তাৎক্ষণিকভাবে আদুরী বেগম নামে ওই নারীর বাড়ি কোথায় তা জানাতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আদুরী বেগম নামের ওই নারী নগরীর তপোধন গ্রামে এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় প্রত্যাশা করেন। ওই বাড়ির অভিভাবক আশিকুল ইসলাম তাকে আশ্রয় দেন। রাত পার করে শুক্রবার সারাদিনও তিনি অবস্থান করেন এবং সন্ধ্যায় আশিকুলের বাড়িতে ইফতার করেন। ইফতার পরবর্তী কোনো এক সময় ওই নারী আশিকুলের সন্তানসহ পার্শ্ববর্তী বাড়ির ৬ থেকে ১০ বছরের চার শিশুকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। বাকি তিন শিশুর বাবার নাম মমিনুল, শফিকুল ও রফিকুল। এসময় সন্তানদের না পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো হয় ঘটনাটি। এর পরেই রংপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় চার শিশুসহ ওই নারীকে আটক করে।
রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম সমকালকে বলেন, আমরা চার শিশুসহ আদুরী বেগম নামে এক নারীকে আটক করেছি। চার শিশুকে ইতোমধ্যে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু উত্তেজিত জনতার কারণে অপহরণকারী ওই নারীকে নিরাপদে থানায় নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে। উত্তেজিত জনতা ওই নারীর বিচার দাবিতে ভিড় করে আছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ শ অপহরণ আটক চ র শ শ সহ ওই ন র ক র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।