কড়কড়ে নতুন টাকা নেই, ঈদে আছে ডিজিটাল সালামি
Published: 30th, March 2025 GMT
ঈদের সালামি মানেই কড়কড়ে নতুন টাকার নোট। এটাই রীতি হয়ে গেছে। এ জন্য প্রতিবছর ঈদ এলেই বাড়ে নতুন নোটের চাহিদা। তবে এ বছর নকশা বিড়ম্বনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে নতুন টাকা ছাড়েনি। ব্যাংকের বাইরে যেসব নতুন টাকা মিলছে, তা পেতে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ফলে এবার নতুন টাকা নেই বললেই চলে। এতে কি বন্ধ হয়ে যাবে কড়কড়ে নতুন টাকার ঈদের সালামি? মোটেও না।
আধুনিক যুগে নগদ টাকার ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের বেতনের অর্ধেক টাকাও এখন আর নগদ খরচ করেন না। ব্যাংকের টাকা প্রয়োজনে স্থানান্তর হয় অন্য ব্যাংকে। প্রয়োজনে ব্যাংকের টাকা যায় বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় (এমএফএস)। এ ছাড়া এখন ব্যাংক হিসাবধারীরাও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করছেন। ফলে এমএফএস ও অ্যাপ হয়ে উঠতে পারে ডিজিটাল সালামি দেওয়ার বড় মাধ্যম। এর মাধ্যমে ঈদের সালামি হিসেবে যে কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনো অঙ্কের টাকা পাঠানো যায়। পাশাপাশি এবার বিকাশ ডিজিটাল সালামি দিতে বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছে।
ঢাকার বাসিন্দা মোকাররম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই নাতি-নাতনিদের ঋণের সালামি দিয়ে আসছি। এবারও তারা অপেক্ষা করবে। নতুন টাকা সংগ্রহ করতে পারিনি, ফলে ডিজিটাল সালামি এখন ভরসা। নাতি-নাতনিরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের ব্যাংক হিসাব ও এমএফএস হিসাব রয়েছে। ফলে সেখানেই এবার সালামি পাঠাব।’
কেবল ঈদ নয়; দেশের বড় উৎসবকে কেন্দ্র করে শুভেচ্ছা বার্তাসহ টাকা পাঠানোর সেবা চালু করে বিকাশ। প্রিয়জনকে উপহার পাঠানো আরও রঙিন ও আনন্দময় করে তুলতে ২০২১ সালে বিকাশ তাদের অ্যাপে ‘ঈদ সালামি এবং ঈদ শুভেচ্ছা’ অপশন দুটি চালু করে।
শুভেচ্ছা কার্ডসহ সালামি পাঠাতে বিকাশ অ্যাপ থেকে যে নম্বরে সেন্ড মানি করা হবে, তা নির্বাচন করার পরপরই নিচের অংশে ‘আপনার উদ্দেশ্য সিলেক্ট করুন’ ট্যাব দেখা যাবে। সেখানে থাকা ঈদ সালামি অথবা ঈদ মোবারক অপশনগুলো থেকে যেকোনো একটি নির্বাচন করতে হবে।
এরপর টাকার অঙ্ক লিখে পরের ধাপে গেলে রেফারেন্স অংশের নিচে ‘কার্ডের মেসেজ আপডেট করুন’ ট্যাব দেখা যাবে। বিকাশ অ্যাপে সংযুক্ত রয়েছে ‘ঈদের আনন্দ ঘরে ঘরে, সালামি দিলাম বিকাশ করে’ অথবা ‘এই ঈদ আপনার জীবনে নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি। ঈদ মোবারক’।
গ্রাহকেরা চাইলে এই মেসেজ দুটি রাখতে পারেন অথবা নিজের পছন্দমতো নতুন মেসেজ লিখে দিতে পারেন। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই মেসেজ লেখার সুযোগ রয়েছে। স্বাক্ষরের অংশে নিজের নাম বা সম্পর্কের পরিচয়, যেমন মা, চাচা, মামা, ভাই, বোন ইত্যাদি লিখে দিতে পারবেন। পরের ধাপে বিকাশ পিন দিলেই শুভেচ্ছা বার্তাসহ সেন্ড মানি করা হয়ে যাবে।
যে গ্রাহক শুভেচ্ছা বার্তা বা ঈদ সালামি পেয়েছেন, তিনি তাঁর ডিভাইসের নোটিফিকেশনে একটি গিফট বক্স দেখতে পাবেন। বক্সে ক্লিক করে বিকাশ অ্যাপে ঢুকলেই সালামির পরিমাণ এবং মেসেজ দেখতে পাবেন।
পাশাপাশি রকেট, নগদসহ অন্য সেবার মাধ্যমেও যেকোনো অঙ্কের টাকা পাঠানোর মাধ্যমে ডিজিটাল সালামি দেওয়া যাবে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস পে, ব্র্যাক ব্যাংকের আস্থা, সিটি ব্যাংকের সিটিটাচসহ আরও বেশ কিছু ব্যাংকের অ্যাপ বেশ জনপ্রিয়। অ্যাপ ব্যবহার করেও গ্রাহকেরা এবার ডিজিটাল সালামি পাঠাতে পারবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নত ন ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইন জুয়ার নামে টাকা পাচারের অভিযোগ, বিশেষ সহকারীর হুঁশিয়ারি
সাইবার সুরক্ষা আইন পাস হলে জুয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া এবং বেটিং সাইটগুলো নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
তিনি জানান, কয়েকটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়া, ক্রিপ্টো কারেন্সি এবং ই-কমার্স এমএলএম এর নাম করে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে। সাইবার আইন পাস হওয়ার পরে আমরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করব।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন সাইবার সুরক্ষা আইনটি পাস হবে বলে আশা করি। এ আইনে সাইবার স্পেসে জুয়া কিংবা অনলাইন জুয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন পাস হওয়ার পরে আমরা জুয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া এবং বেটিং সাইটগুলো নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেব।”
বেটিং সাইটগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত এমএফএস কোম্পানিগুলোর সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানির বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়া, ক্রিপ্টো কারেন্সি এবং ই-কমার্স এমএলএম এর নাম করে অর্থ পাচারের অভিযোগ ঘনীভূত হচ্ছে। সাইবার আইন পাস হওয়ার পরে আমরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করব।”
“আমরা মোবাইল ব্যাংকিংসহ ফাইনান্সিয়াল অর্গানাইজেশনগুলোকে আগাম সতর্কতা জানিয়ে রাখি। কেননা সাইবার জুয়া কোম্পানিগুলো মোবাইল ব্যাংকিংসহ ব্যাংক, ফাইনান্সিয়াল হাউজ কিংবা পেমেন্ট গেটওয়ে, এমএফএস, পিএসও বা পিএসপি ইত্যাদির সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড।”
সেখানে তিনি লেখেন, “'মাসের পর মাস নির্দিষ্ট কিছু পুলের মোবাইল ফাইনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে ইরেগুলার, একমুখী এবং অস্বাভাবিক ট্রানজেকশন হচ্ছে। একটা পুল অফ নাম্বারে টাকা যাচ্ছে, সেটা নির্দিষ্ট নাম্বারে গিয়ে ক্যাশ আউট হয়ে বাইরে পাচার হচ্ছে, আপনি দেখেও না দেখার ভান করে বলবেন, আমি জড়িত না! এটা হবে না। সুতরাং অবৈধ জুয়ার জড়িত সবাই সাবধান।”
এদিকে গতকাল রবিবার অনলাইন জুয়া বন্ধে সাত দপ্তরের সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট, লিংক ও গেটওয়েগুলো কারা কীভাবে চালায়, তা এ কমিটি চিহ্নিত করবে।
অনলাইন জুয়া নিয়ে পত্রিকায় আসা একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট আবেদন করেন তানজিম রাফিদ নামের এক ব্যক্তি। এতে অনলাইন জুয়া খেলার সব ওয়েবসাইট, লিংক ও গেটওয়ে অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
তারকাদের মাধ্যমে সামাজিক ও মূলধারার মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মে অনলাইন জুয়ার প্রচারের বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বিজ্ঞাপন বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
ঢাকা/হাসান/ইভা