মাকে কষ্ট না দিতে মিথ্যা বলে যাচ্ছিলাম—‘খেয়ে নিয়েছি’
Published: 30th, March 2025 GMT
২০২২ সালে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। কারণ, পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করতাম। ঈদের ওই সময় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছিল। হাতে সময় ছিল কম। তাই নির্দিষ্ট কিছু বন্ধু ও সিনিয়রদের সঙ্গেই ক্যাম্পাসেই ঈদ করি।
ঈদের দিন সকালে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ আদায় করি। নামাজ শেষে সিনিয়রদের কাছ থেকে সালামি নিই। মোট আট শ টাকা পাই। এই সালামি পাওয়ার যে আনন্দ, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। হলে ফিরে জানতে পারি, ঈদ উপলক্ষে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ, যা কিছুটা হলেও ‘বাড়ির ঈদের আনন্দ’ দিয়েছিল। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হই। হঠাৎ ডিপার্টমেন্টের এক সিনিয়র ভাই ফোন করে বলল, তিনিও ক্যাম্পাসে আছেন। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান খাওয়াতে চান। অনেক উচ্ছ্বাস নিয়ে মেজবান খেতে চললাম। খাওয়া আর হলো কই!
সেদিন রেস্টুরেন্টসহ চট্টগ্রামের প্রায় সব দোকানই ছিল বন্ধ। হতাশ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে দেখি, সেখানেও একই অবস্থা। ক্যাম্পাসের ভেতরে-বাইরে, আশপাশে হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ।
পরিবারের গুরুত্ব কতখানি—সেদিন উপলব্ধি করেছিলাম। একদিকে মা বারবার ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে, কী খেয়েছি, কেমন আছি। মাকে কষ্ট না দিতে মিথ্যা বলে যাচ্ছিলাম—‘খেয়ে নিয়েছি।’ বাস্তবে সকালের খাবার ছাড়া সারাদিন কিছুই খেতে পারিনি। এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে, ঈদ কেবল ভালো খাবার বা আনন্দের মুহূর্ত নয়, বরং এটি পরিবারের সান্নিধ্য এবং ভালোবাসার অনুভূতি, যা দূরে থাকলে আরও গভীরভাবে অনুভূত হয়।
মারুফ মিয়া.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।
গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।
অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।
ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”
হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।
ঢাকা/আমিনুল