দিন যত বাড়ছে, ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর জনপ্রিয়তাও তত বাড়ছে। বাড়ছে বাংলা ওয়েব কনটেন্টের জনপ্রিয়তাও। অ্যাকশন, থ্রিলার, মার্ডার মিস্ট্রি, ভিন্ন গল্পে প্রতিনিয়তই আসছে নতুন সব ওয়েব ফিল্ম ও সিরিজ; যেগুলোর নেশায় মজে থাকছেন প্রায় সব শ্রেণির দর্শক। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই, বঙ্গ, চরকি, দীপ্ত প্লে, আইস্ক্রিনে থাকছে নানা আয়োজন।
চরকি
মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২: ওয়েব সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ হচ্ছে ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া সর্বাধিক আলোচিত একটি কনটেন্ট। এটি ২০২২ সালের জনপ্রিয় সিরিজ ‘সিন্ডিকেট’-এর স্পিন-অব সিকুয়াল। যেখানে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন নাসির উদ্দিন খান এবং ‘অ্যালেন স্বপন’-এর স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।
এবার জানা গেছে, ঈদে আসছে চরকি অরিজিনাল ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’ সিরিজ। চট্টগ্রামের মাদক কারবারি থেকে স্বপন কীভাবে হয়ে ওঠে মানি লন্ডারিংয়ের মূলহোতা, সেই গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছিল মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন সিরিজের প্রথম সিজন। নতুন সিজনে বাড়তে পারে স্বপনের কাজের পরিসর; বদলাতে পারে কাজের ধরনও। ‘অ্যালেন স্বপন’ চরিত্রে এবারও আছেন নাসির উদ্দিন খান।
এ সিজনে ‘অ্যালেন স্বপন’ চরিত্রটি আরও ভয়ংকররূপে হাজির হবে। চরিত্রটির যে দুষ্টু স্বভাব, তার ধারাবাহিকতা থাকবে নতুন সিজনেও। সিরিজটি আবারও নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন। এদিকে প্রথম সিজনের রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, আইমন শিমলা, ফরহাদ লিমন, অর্ণব ত্রিপুরা অভিনয় করেছেন দ্বিতীয় সিজনেও। এ ছাড়া আরও যুক্ত হচ্ছেন নতুন অভিনয়শিল্পীও।
হইচই
ঈদ উপলক্ষে গত শুক্রবার হইচইতে মুক্তি পেয়েছে আশফাক নিপুণ পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘জিম্মি’। এই সিরিজে প্রধান চরিত্রে জয়া আহসান অভিনয় করেছেন নিম্নপদস্থ এক সরকারি কর্মকর্তার চরিত্রে, যিনি গত দশ বছরেও পদোন্নতি পাননি। গল্পে উঠে এসেছে তাঁর আর্থিক সংকট এবং নৈতিক সংকট, যা দেখে বেশ উপভোগ করবেন দর্শক– এমনটিই মনে করছেন সিনে-বিশ্লেষকরা। এ ছাড়াও এই মাধ্যমে শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে বাংলা সিনেমা ‘এই রাত তোমার আমার’। এতে অভিনয় করেছেন অঞ্জন দত্ত, অপর্ণা সেন।
বঙ্গ
যারা রোমান্টিক কমেডি পছন্দ করেন তাদের জন্য এই ঈদে মুক্তি পেতে চলেছে কাজল আরেফিন ওমির পরিচালনায় নির্মিত ওয়েব ফিল্ম হাউ সুইট। এ ছবিটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তাসনিয়া ফারিণ। এ ছাড়া তাদের পাশাপাশি আরও অভিনয় করেন পাভেল, সুষমা সরকার, আরফান মৃধা শিবলুসহ অনেকে।
আইস্ক্রিন
শবনম বুবলী এবার ঈদে বড়পর্দায় আসবেন সিয়াম আহমেদের বিপরীতে ‘জংলি’ সিনেমায়। পাশাপাশি ওটিটিতেও দেখা মিলবে তাঁর। নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সমাজে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিতে ওয়াজেদ আলী সুমন নির্মাণ করেছেন ‘ছায়া’। তাতে কাজ করেছেন বুবলী। বিপরীতে আছেন আসিফ নূর। ২০২৩ সালে শুটিং হওয়া সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত মুক্তি পাচ্ছে ওয়েব ফিল্ম হিসেবে। এতে দুই শিশুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিমরিন লুবাবা ও অর্ণিল, অন্যান্য চরিত্রে পল্লব, শবনম বুবলী, আসিফ নূর প্রমুখ। ঈদের দিন আইস্ক্রিনে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
দীপ্ত প্লে
দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দীপ্ত প্লে দর্শকের মনোরঞ্জনের কথা ভেবে একাধিক সিনেমা নিয়ে ঈদ আয়োজন সাজিয়েছে। তারা দেখাবে তুরস্কের ৫টি সিনেমা। এগুলো হলো– ‘ডাব্বে ৪’, ‘হুইস্পার ইফ আই ফরগেট’, ‘গার্লস রোবারি’, ‘মাই সন’, ‘এ ইউনিক লাইফ’। তুর্কি ভাষা থেকে বাংলায় ডাবিং করে দেখানো হবে সিনেমাগুলো। তুর্কি সিনেমাগুলোর বাংলা ডাবিংয়ে ছিলেন দীপ্ত কণ্ঠাভিনয় টিম ও দীপ্ত টিভির নিজস্ব সংলাপ রচয়িতার দল। প্রযোজনা করেছেন মাসুদ মিয়া।
নেটফ্লিক্স
ঈদ উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেতে চলেছে চিকিৎসাভিত্তিক নতুন সিরিজ ‘পালস’। এই সিরিজের গল্প আবর্তিত হয়েছে মায়ামির একটি হাসপাতাল ঘিরে। সারাহ বয়েড পরিচালনায় নির্মিত এ সিরিজে অভিনয় করেছেন উইলা ফিটজেরাল্ড, জাস্টিনা ম্যাচাডো, জ্যাক ব্যাননসহ আরও অনেকে। ৪ এপ্রিল মুক্তি পাবে নয়নতারা, সিদ্ধার্থ ও মাধবন অভিনীত তামিল সিনেমা ‘টেস্ট’।
সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এস শশিকান্ত। সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে এক ক্রিকেট ম্যাচকে কেন্দ্র করে; যেখানে দেখা যাবে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত একটি ঐতিহাসিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টেস্ট ম্যাচের সময় তিনজন মানুষের জীবন একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত তাদের জীবন পরিবর্তনকারী কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। গত শুক্রবার এই মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে ইংরেজি সিনেমা ‘দ্য লেডিস কম্পানিয়ন’। এতে অভিনয় করেছেন নাদিয়া ডি সান্তিয়াগো, আলভেরো মেল, ত্রিস্টান উলোয়া, ক্যান্ডেলা প্রাডাস। আরও এসেছে শহীদ কাপুর, পূজা হেগড়ে অভিনীত ‘দেবা’।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর চ ল ক রব র নত ন স
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিক অধিকার, আন্দোলন ও শ্রম সংস্কারের প্রস্তাবনার বাস্তবতা
মে দিবস শুধু একটি তারিখ নয়, এটি শ্রমজীবী মানুষের শতবর্ষব্যাপী সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। ১৮৮৬ সালে শিকাগো শহরে শ্রমঘণ্টা নির্ধারণের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল দিনটি। আজ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই দিনটি পালিত হয় শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে। বাংলাদেশেও মে দিবস পালিত হয় আনুষ্ঠানিকতা ও প্রতীকী উদ্যাপনের ভেতর দিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশের শ্রমিকশ্রেণির জীবনমান, অধিকার ও কর্মপরিবেশ এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এই প্রবন্ধে মে দিবসের তাৎপর্য, বাংলাদেশের শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থান, শ্রমিক আন্দোলনের ধারা ও শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বাস্তবতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
বাংলাদেশের শ্রমিকশ্রেণি: পরিসংখ্যান ও বাস্তবতাবাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৃহৎ অবদান রাখা সত্ত্বেও শ্রমিকেরা চূড়ান্ত পর্যায়ের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার। দেশের প্রায় ছয় কোটি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে একটি বড় অংশ পোশাক কারখানা, নির্মাণ, পরিবহন, কৃষি ও সেবা খাতে যুক্ত। অনেকেই অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন, যেখানে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট চাকরির নিরাপত্তা, নেই শ্রমিককল্যাণ সুবিধা এবং নেই সংগঠনের অধিকার।
বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত, যেখানে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে এখান থেকে। কিন্তু এ খাতের শ্রমিকদের অধিকাংশই পান না যথোপযুক্ত মজুরি। নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাবে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে, যেমন রানা প্লাজা ধস কিংবা তাজরীন ফ্যাশনসের আগুন।
শ্রমিকসংগঠন ও আন্দোলনের ধারাবাংলাদেশে শ্রমিক আন্দোলনের একটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। পাকিস্তান আমলে শ্রমিকেরা বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে শ্রমঘণ্টা নির্ধারণ, মজুরি বৃদ্ধির দাবি আদায় করেছিলেন। স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব, সুবিধাবাদী নেতৃত্ব ও বিভক্তি শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দুর্বল করে দেয়।
বর্তমানে শ্রমিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে দুটি চিত্র স্পষ্ট—একদিকে কিছু আন্তরিক ও ত্যাগী শ্রমিকনেতা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে লড়ছেন; অন্যদিকে কিছু নেতার ব্যক্তিস্বার্থ ও রাজনৈতিক যোগসূত্র আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এ কারণে শ্রমিকদের প্রকৃত স্বার্থ উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই শ্রমিকেরা আস্থা হারাচ্ছেন সংগঠনের প্রতি।
সরকার ও শ্রমিকনীতিবাংলাদেশ সরকার শ্রমনীতি প্রণয়নের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও কর্মপরিবেশ উন্নয়নের অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে তা অনেক সময়েই কার্যকর হয় না। আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার, মজুরি নিয়ে দর-কষাকষি করার অধিকার থাকলেও বহু ক্ষেত্রে এই অধিকার চর্চা করতে গিয়ে শ্রমিকেরা হয়রানির শিকার হন।
অনেক মালিক প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনকে ভয় পান। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সংগঠনের চেষ্টা দমন করতে তাঁদের ছাঁটাই করা হয়, ভয়ভীতি দেখানো হয়; এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়রানি, হামলা বা মামলা দেওয়া হয়। আর তাই শ্রমিকেরা সংগঠিত হওয়ার আগে দশবার ভাবেন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব: আশার আলো নাকি প্রতীকী পদক্ষেপ?সম্প্রতি গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা দিয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে। কমিশনের প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে–
১. তিন বছর পরপর জাতীয় মজুরি নির্ধারণ করা, ২. বার্ষিক মূল্যস্ফীতির ভিত্তিতে মজুরি সমন্বয়, ৩. সময়মতো বেতন না দিলে ক্ষতিপূরণ, ৪. শ্রমিকদের জন্য আপৎকালীন তহবিল গঠন, ৫. ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের শর্ত শিথিল, ৬. আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ বন্ধ, ৭. মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাসে উন্নীত করা, ৮. শ্রম আদালতকে আধুনিকায়ন ও সংস্কার ও ৯. শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা বাড়ানো।
এই প্রস্তাবগুলো অনেকাংশেই সময়োপযোগী ও শ্রমিকবান্ধব। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে সরকার কতটা আন্তরিক? অতীত অভিজ্ঞতা বলে, নীতিগত সিদ্ধান্ত অনেক সময়ই মাঠপর্যায়ে এসে বাস্তবায়িত হয় না। আইন থাকলেও তার প্রয়োগ দুর্বল থাকে। আবার মালিকদের সংগঠন যেকোনো সংস্কারমূলক পদক্ষেপকে ব্যাহত করতে সক্রিয় থাকে।
শ্রম সংস্কারের চ্যালেঞ্জপ্রথমত, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার নিশ্চিত না হলে কোনো সংস্কারই বাস্তব ফল দেবে না। দ্বিতীয়ত, শ্রম আদালতের ধীরগতি, মামলার জট ও রায় কার্যকর না হওয়া শ্রমিকদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে। তৃতীয়ত, শ্রম আইন প্রয়োগে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, যেমন শ্রম পরিদর্শক বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ— তাঁদের প্রশিক্ষণ, জনবল ও নিরপেক্ষতা অনেক সময়েই প্রশ্নবিদ্ধ।
এ ছাড়া নারী কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ, মাতৃত্বকালীন ছুটি, যৌন হয়রানিবিরোধী কার্যকর ব্যবস্থা এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্বেও নারীর অংশগ্রহণ খুবই সীমিত, যা একটি দুঃখজনক বাস্তবতা।
আশাবাদ ও করণীয়তবু শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো যদি আন্তরিকতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হতে পারে। এ জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং মালিক-শ্রমিক অংশীদারত্বের ভিত্তিতে একটি স্বচ্ছ ও কার্যকর কাঠামো গঠন।
সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, যেন কোনো শ্রমিককে সংগঠন গঠনের জন্য হেনস্তার শিকার না হতে হয়। ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে প্রয়োজন আত্মসমালোচনা ও গণতান্ত্রিক সংস্কার। নেতৃত্বে প্রগতিশীল, শ্রমিকবান্ধব ও দূরদর্শী ব্যক্তিদের আনতে হবে। শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ও অধিকারবিষয়ক প্রচার চালাতে হবে।
সর্বোপরি, মালিক শ্রেণিকে বোঝাতে হবে যে শ্রমিকদের কল্যাণ শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পূর্বশর্তও বটে। একটি কর্মিবান্ধব পরিবেশ কর্মক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, যা শেষ পর্যন্ত মালিকেরও লাভ।
উপসংহারমে দিবসের চেতনা আমাদের শিক্ষা দেয় যে শ্রমিকের অধিকার কোনো দয়া নয়, এটি তাঁর প্রাপ্য। এই চেতনাকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কেবল মে দিবসে ব্যানার, শোভাযাত্রা বা আনুষ্ঠানিকতা নয়, শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সংগঠনের অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করাই হোক আমাদের মূল অঙ্গীকার।
শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা যদি শ্রমিকদের উন্নত জীবনের ভিত্তি তৈরি করতে পারি, তবেই মে দিবস হবে অর্থবহ; আর বাংলাদেশ একটি মানবিক, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
সাহিদা পারভীন শিখা সাধারণ সম্পাদক জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র