ঢাকার মিরপুরে ৪ হাজার ৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, খিলক্ষেত, পূর্বাচল এলাকায় ১০টি প্লট রয়েছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর নামে। এ ছাড়া ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আরও একটি ফ্ল্যাট, পূর্বাচলে একটি বাড়ি ও সাভারে আরেকটি জমিসহ টিনশেড বাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের অনুসন্ধানে মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী তাসরিন মুজিবের এসব স্থাবর সম্পদ ছাড়াও ১৫টি ব্যাংক হিসাবে বিপুল অঙ্কের অর্থের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন মুজিবুর রহমান। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মুজিবুর রহমান সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদ করেছেন। মুজিবুর ও তাঁর স্ত্রীর বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে দুর্নীতি-ঘুষের বিপুল পরিমাণ টাকা জমা ও উত্তোলন করা হয়েছে।

মুজিবুর রহমান তাঁর স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে থাকা ঢাকার ২টি ফ্ল্যাট, ১১টি প্লট ও সাভারের বাড়ি ক্রোক করতে আদালতে আবেদন করেছে দুদক। পাশাপাশি তাঁদের ১৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক গত সোমবার আদালতে মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধের আবেদন করেন।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগপর্যন্ত মুজিবুর রহমান এসএসএফের মহাপরিচালক ছিলেন। এরপর তাঁকে ময়মনসিংহে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি পদ থেকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর মুজিবুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়। লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো.

মুজিবুর রহমান এর আগে সেনা সদর দপ্তরে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক ছিলেন।

দুদক সূত্র জানায়, মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্লট রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি প্লটের মালিক তাসরিন মুজিব। তাঁর নামে এসব প্লট রয়েছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাউনিয়া মৌজা এলাকায়। তাঁর নামে থাকা সবচেয়ে বড় প্লট সাড়ে ৭ কাঠার। যার মৌজা মূল্য দেখানো হয়েছে ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া তাসরিনের নামে ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের জোয়ার সাহারা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

মিরপুরের মাটিকাটা এলাকায় মুজিবুর রহমানের নামে ৪০৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। তিনি এই ফ্ল্যাটের মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তাঁর নামে মিরপুরের মাটিকাটা, ক্যান্টনমেন্ট ও খিলক্ষেত এলাকায় তিনটি প্লট রয়েছে। মুজিবুরের নামে সবচেয়ে বড় সাড়ে ৭ কাঠার প্লট রয়েছে খিলক্ষেত এলাকায়। প্লটের বাইরে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে তাঁর নামে একটি প্লটসহ বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া সাভারে আছে ৫ শতাংশ জায়গার ওপর জমিসহ টিনশেড বাড়ি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ব র রহম ন ও ত ক য ন টনম ন ট এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ